
চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামে একজন নাগরিক কর্তৃক পেশাদার সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা, উদ্দেশ্যমূলক ও বিভ্রান্তিকর অভিযোগে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার অভিযোগ উঠেছে। চট্টগ্রামের হালিশহর এলাকার মো. আল আমিন নামের এক ব্যক্তি সম্প্রতি হালিশহর থানায় একাধিক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে জিডি করেন, যেখানে তিনি দাবি করেন—তার নামে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
তবে সাংবাদিক মহল এবং সংশ্লিষ্ট পেশাদাররা এই অভিযোগকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও সাংবাদিকতার স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ বলে অভিহিত করেছেন। অভিযোগকারীর দেওয়া বিবৃতিতে যেসব সাংবাদিকের নাম এসেছে—তারা দেশের স্বনামধন্য গণমাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন।
উল্লেখযোগ্যভাবে, অভিযোগপত্রে ফেসবুক লিংক উল্লেখ করে বলা হয়েছে, সাংবাদিকরা নাকি তার বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য প্রচার করেছেন। কিন্তু যাচাই করে দেখা গেছে, ওইসব পোস্টে অভিযোগকারী সম্পর্কে সংবাদভিত্তিক তথ্য প্রকাশিত হয়েছিল, যা জনস্বার্থে করা হয়েছে।
বিষয় জানাজানি হলে অনুসন্ধানে নামে কিছু অনুসন্ধানী সাংবাদিক দল। তারা বিষয়টি খুটিয়ে দেখার পর বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়ে যায়। ঘটনাটি ঘটে সাগরপাড় আকমলআলী এলাকায়। স্থানীয় সাংবাদিকের কাছে খবর আসে জেলেদের মাছ চুরির ঘটনায় ২ জনকে আটক করে সাগরপারের জেলেরা। বিষয়টি জানতে সেখানে ছুটে জান কিছু সাংবাদিক। সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখে আটককৃত ২ জনর মধ্যে ১ জন মহিলা আরেক জন পুরুষ। তাদের মধ্যে ১জনের পরিচয় জানতে চাইলে তিনি দৈনিক সরেজমিন বার্তা পত্রিকা চট্টগ্রাম রিপোর্টার আলামিন পরিচয় দেন এবং সাথে থাকা মহিলা আছমা আক্তার তামান্না অনলাইন নিউজ পোর্টাল সিএন টিভিতে কাজ করে বলেন।
ঘটনাস্থলের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ হারালে সেখানে থাকা বিক্ষুব্ধ জেলেরা তাদের উপর চওরাও হয় এবং তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন জেলেদের ৬ বস্তা মাচ ছুরি করেন তারা। পরে ঘটনাস্থলে থাকা সাংবাদিকরা তাকে নিরাপদে সেখান থেকে সরিয়ে নেয়।
এরপর বিষয়টি নিয়ে কিছু কথিত সাংবাদিক সংগঠন ও সাংবাদিক আহত সেই সরেজমিন বার্তা রিপোর্টার পরিচয় দেওয়া আল আমিনকে ভুল বুঝিয়ে পেশাদার সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও থানায় জিডি দায়ের করানো হয়।
ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা জানান, সংবাদ প্রকাশের পর রাজনৈতিক ও প্রভাবশালী মহলের চাপে তাদের ভয়ভীতি ও হয়রানির উদ্দেশ্যে এই ধরনের জিডি করা হয়েছে। এতে করে সত্য ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
তারা আরও বলেন, যদি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এমনভাবে অপপ্রচার চালিয়ে হয়রানি করা হয়, তবে স্বাধীন সাংবাদিকতা চরম হুমকির মুখে পড়বে।
সাংবাদিক সংগঠনগুলো এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছে, এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ জরুরি।
এদিকে স্থানীয়রা মনে করছেন, অপরাধ ঢাকতে এভাবে পেশাদার সংবাদকর্মীদের ওপর দোষ চাপানো অন্যায় এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
ঘটনার যথাযথ তদন্ত করে প্রকৃত সত্য উন্মোচনের দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।



























