০১:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫

কৃষক ইমদাদুলের সাফল্য বাগান উদ্যোক্তা থেকে সমৃদ্ধ ফলজ বাগান

  • প্রকাশের সময় : ০৮:৩৯:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর ২০২৫
  • 49

মোঃ মোসলেম উদ্দিন সিরাজী
‎সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি

‎সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার সলপ ইউনিয়নের কানসোনা এলাকায় কৃষক মোঃ ইমদাদুল হক করেছেন এক বাগান। বৃহস্পতিবার ৬ নভেম্বর ২০২৫ সরজমিনে কানসোনা এলাকায় গেলে জানা যায় কৃষক মোঃ ইমদাদুল হক তার প্রবাসী বন্ধু মোঃ নুর উদ্দিন ইসলামের ২০ শতাংশ জমিতে বাগানটা করেছেন। চোখ যায়, শুধু মাল্টা ফলের বাগানে। থোকায় থোকায় ঝুলছে সবুজ ভিয়েতনাম জাতের মাল্টা। বাগানে গাছের ডাল গুলো যেনো মাল্টার ভারে ঝুলে পড়েছে।

তিনি বিভিন্ন জাতের ফল আবাদ করে একজন সফল উদ্দ্যোক্তা হিসেবে এলাকায় ব্যাপক পরিচিতি অর্জন করেছেন। বিশেষ করে মাল্টা, আঙ্গুর খুবই সুস্বাদু, রসালো ও স্বাস্থ্যসম্মত ফল। যে কারণে এর চাহিদাও রয়েছে প্রচুর। তরুণ উদ্যোক্তা কৃষক ইমদাদুল হক কৃষি ক্ষেত্রে এক অনুপ্রেরণার দৃষ্টান্ত।

একসময় তিনি পেশায় ছিলেন রেস্টুরেন্টের হেড শেফ। জীবিকার প্রয়োজনে রান্নাঘরেই কাটতো তার দিনকাল। কিন্তু প্রকৃতি ও সবুজের প্রতি গভীর ভালোবাসা থেকেই তিনি কৃষির প্রতি আকৃষ্ট হয়ে উঠেছেন।

সেই ভালোবাসার ফলেই শুরু হয় তার ফলজ বৃক্ষের যাত্রা নিজের বাড়ির আঙ্গিনা থেকে কয়েকটি চারা রোপণের মধ্য দিয়ে ক্রমেই সে আগ্রহেয় পরিণত হয় এই পেশায়। বর্তমানে ইমদাদুল হক সফলভাবে পরিচালনা করেছেন একটি আধুনিক ফলজ বাগান।

যেখানে রয়েছে চায়না কমলা, উন্নত জাতের আঙ্গুর, মাল্টা, লটকোনা, লেবু, পেয়ারা ও অন্যান্য দেশি-বিদেশি ফলের চারা। ইমদাদুল হক বলেন, আমার নার্সারী থেকে শুধু উল্লাপাড়া নয়, আশপাশের বিভিন্ন  উপজেলা থেকে জেলা থেকে ফলজ গাছ ও চারা সরবরাহ করা হচ্ছে। প্রযুক্তির সুবিধা কাজে লাগিয়ে তিনি অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ফলজ চারা বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছেন, যা স্থানীয় অর্থনীতিতে ও ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

নিজস্ব জমি না থাকলেও থেমে থাকেননি কৃষক মোঃ ইমদাদুল হক। তার এক প্রবাসী বন্ধু ২০ শতাংশ জমি তাকে ব্যবহার করার সুযোগ দেন, সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। সেই জমিতেই শুরু হয় কৃষক মোঃ ইমদাদুলের বাগানের যাত্রা, যা এক সফল কৃষি উদ্যোক্তার গল্পে রূপ নিয়েছে। এ বিষয়ে বাগানের মালিক মোঃ ইমদাদুল হক বলেন,

‎আমি চাই দেশের মানুষ ফলজ গাছের চাষে আগ্রহী হোক কারণ ফলজ চাষে সফলতা অর্জনে লাভবান হতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তিনি আরো বলেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সুবর্ণা ইয়াসমিন সুমি স্যার ও তার অফিসের কর্মকর্তারা

‎যেমন আমার পাশে থেকে সহযোগিতা করেন আমি মনে করি প্রতিটি কৃষকের পাশে দাঁড়ালে প্রতিটি কৃষক ফলজ চাষে উদ্বুদ্ধ হবে এবং ফলজ চাষে আগ্রহ হয়ে তা বাস্তবায়ন করবে। উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতা পেলে বাগানটিকে আরো বৃদ্ধি আকারে প্রসারিত করে দেশীয় ফল উৎপাদনে ভূমিকা রাখতে চাই।

কৃষির উন্নয়নেই আমার স্বপ্ন। এবিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সুবর্ণা  ইয়াসমিন সুমি স্যারের কাছে মুঠো ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন উপজেলার সলপ ইউনিয়নের কানসোনা এলাকার কৃষক মোঃ ইমদাদুল হক কে আমরা সাধুবাদ জানাই। আমরা কৃষক মোঃ ইমদাদুল হক এর সাথে পাশে যেমন আছি তেমনি প্রতিটি কৃষকের সাথে পাশে আছি এবং থাকবো। প্রতিটি কৃষককে কৃষি কাজে আমাদের সাধ্যমতে সাহায্য সহযোগিতা করবো।

কৃষক মোঃ ইমদাদুল হক এর মতো যারা কৃষি কাজের সাথে জড়িত আমরা তাদের কে ও সুযোগ সুবিধা দিবো যাতে তারা সামনের দিন গুলো আরো ভালোভাবে ফলজ চাষে উদ্বুদ্ধ হতে পারে এবং আমার উল্লাপাড়া উপজেলাকে ফলজ চাষে প্রথম স্থানে রাখতে পারে এবং কৃষক মোঃ ইমদাদুলের এই উদ্যোগ অন্যান্য তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হতে পারে।

সঠিক দিকনির্দেশনা ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার অব্যাহত থাকলে তার এই বাগান ভবিষ্যতে একটি সফল বাণিজ্যিক কৃষি মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে

জনপ্রিয়

২০১৮ সালে সংসদে যাওয়া দলীয় প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে বিএনপির মশাল মিছিল

কৃষক ইমদাদুলের সাফল্য বাগান উদ্যোক্তা থেকে সমৃদ্ধ ফলজ বাগান

প্রকাশের সময় : ০৮:৩৯:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর ২০২৫

মোঃ মোসলেম উদ্দিন সিরাজী
‎সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি

‎সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার সলপ ইউনিয়নের কানসোনা এলাকায় কৃষক মোঃ ইমদাদুল হক করেছেন এক বাগান। বৃহস্পতিবার ৬ নভেম্বর ২০২৫ সরজমিনে কানসোনা এলাকায় গেলে জানা যায় কৃষক মোঃ ইমদাদুল হক তার প্রবাসী বন্ধু মোঃ নুর উদ্দিন ইসলামের ২০ শতাংশ জমিতে বাগানটা করেছেন। চোখ যায়, শুধু মাল্টা ফলের বাগানে। থোকায় থোকায় ঝুলছে সবুজ ভিয়েতনাম জাতের মাল্টা। বাগানে গাছের ডাল গুলো যেনো মাল্টার ভারে ঝুলে পড়েছে।

তিনি বিভিন্ন জাতের ফল আবাদ করে একজন সফল উদ্দ্যোক্তা হিসেবে এলাকায় ব্যাপক পরিচিতি অর্জন করেছেন। বিশেষ করে মাল্টা, আঙ্গুর খুবই সুস্বাদু, রসালো ও স্বাস্থ্যসম্মত ফল। যে কারণে এর চাহিদাও রয়েছে প্রচুর। তরুণ উদ্যোক্তা কৃষক ইমদাদুল হক কৃষি ক্ষেত্রে এক অনুপ্রেরণার দৃষ্টান্ত।

একসময় তিনি পেশায় ছিলেন রেস্টুরেন্টের হেড শেফ। জীবিকার প্রয়োজনে রান্নাঘরেই কাটতো তার দিনকাল। কিন্তু প্রকৃতি ও সবুজের প্রতি গভীর ভালোবাসা থেকেই তিনি কৃষির প্রতি আকৃষ্ট হয়ে উঠেছেন।

সেই ভালোবাসার ফলেই শুরু হয় তার ফলজ বৃক্ষের যাত্রা নিজের বাড়ির আঙ্গিনা থেকে কয়েকটি চারা রোপণের মধ্য দিয়ে ক্রমেই সে আগ্রহেয় পরিণত হয় এই পেশায়। বর্তমানে ইমদাদুল হক সফলভাবে পরিচালনা করেছেন একটি আধুনিক ফলজ বাগান।

যেখানে রয়েছে চায়না কমলা, উন্নত জাতের আঙ্গুর, মাল্টা, লটকোনা, লেবু, পেয়ারা ও অন্যান্য দেশি-বিদেশি ফলের চারা। ইমদাদুল হক বলেন, আমার নার্সারী থেকে শুধু উল্লাপাড়া নয়, আশপাশের বিভিন্ন  উপজেলা থেকে জেলা থেকে ফলজ গাছ ও চারা সরবরাহ করা হচ্ছে। প্রযুক্তির সুবিধা কাজে লাগিয়ে তিনি অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ফলজ চারা বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছেন, যা স্থানীয় অর্থনীতিতে ও ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

নিজস্ব জমি না থাকলেও থেমে থাকেননি কৃষক মোঃ ইমদাদুল হক। তার এক প্রবাসী বন্ধু ২০ শতাংশ জমি তাকে ব্যবহার করার সুযোগ দেন, সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। সেই জমিতেই শুরু হয় কৃষক মোঃ ইমদাদুলের বাগানের যাত্রা, যা এক সফল কৃষি উদ্যোক্তার গল্পে রূপ নিয়েছে। এ বিষয়ে বাগানের মালিক মোঃ ইমদাদুল হক বলেন,

‎আমি চাই দেশের মানুষ ফলজ গাছের চাষে আগ্রহী হোক কারণ ফলজ চাষে সফলতা অর্জনে লাভবান হতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তিনি আরো বলেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সুবর্ণা ইয়াসমিন সুমি স্যার ও তার অফিসের কর্মকর্তারা

‎যেমন আমার পাশে থেকে সহযোগিতা করেন আমি মনে করি প্রতিটি কৃষকের পাশে দাঁড়ালে প্রতিটি কৃষক ফলজ চাষে উদ্বুদ্ধ হবে এবং ফলজ চাষে আগ্রহ হয়ে তা বাস্তবায়ন করবে। উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতা পেলে বাগানটিকে আরো বৃদ্ধি আকারে প্রসারিত করে দেশীয় ফল উৎপাদনে ভূমিকা রাখতে চাই।

কৃষির উন্নয়নেই আমার স্বপ্ন। এবিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সুবর্ণা  ইয়াসমিন সুমি স্যারের কাছে মুঠো ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন উপজেলার সলপ ইউনিয়নের কানসোনা এলাকার কৃষক মোঃ ইমদাদুল হক কে আমরা সাধুবাদ জানাই। আমরা কৃষক মোঃ ইমদাদুল হক এর সাথে পাশে যেমন আছি তেমনি প্রতিটি কৃষকের সাথে পাশে আছি এবং থাকবো। প্রতিটি কৃষককে কৃষি কাজে আমাদের সাধ্যমতে সাহায্য সহযোগিতা করবো।

কৃষক মোঃ ইমদাদুল হক এর মতো যারা কৃষি কাজের সাথে জড়িত আমরা তাদের কে ও সুযোগ সুবিধা দিবো যাতে তারা সামনের দিন গুলো আরো ভালোভাবে ফলজ চাষে উদ্বুদ্ধ হতে পারে এবং আমার উল্লাপাড়া উপজেলাকে ফলজ চাষে প্রথম স্থানে রাখতে পারে এবং কৃষক মোঃ ইমদাদুলের এই উদ্যোগ অন্যান্য তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হতে পারে।

সঠিক দিকনির্দেশনা ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার অব্যাহত থাকলে তার এই বাগান ভবিষ্যতে একটি সফল বাণিজ্যিক কৃষি মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে