১২:১২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫

কুমিল্লা জেলা সদর দক্ষিণ থানার সাম্প্রতিক ঘটনাবলী ও সাংবাদিকদের অভিজ্ঞতার আলোকে আমরা অত্যন্ত গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি

  • প্রকাশের সময় : ০২:৫০:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫
  • 76

নিয়মিত মাসিক সভা, সার্কেল-ভিত্তিক নির্দেশনা ও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে দেয়া সচেতনতামূলক বার্তাগুলো হয়েছে, কিন্তু মাঠ পর্যায়ে কোনো দৃঢ় ও প্রতীয়মান দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হয়নি — ফলে অনিয়ম-দুর্নীতি ও অপরাধীরাজ জাতীয় কার্যকলাপ অব্যাহত রয়েছে এবং সাধারণ মানুষ ও গণমাধ্যমের আস্থাহীনতা বাড়ছে।

নিম্নলিখিত বিষয়গুলো আমরা স্পষ্টভাবে তুলে ধরছি — এবং দ্রুত, দৃশ্যমান ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানাই:

১) বারবার সতর্কবার্তা এবং নির্দেশনা দিলেও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নেই

অফিসিয়াল সভা ও হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় নীতিগত তাগিদ থাকলেও, অনিয়মের ক্ষেত্রে শুধু বদলি-কর্মর্কম দেখা যায়; কঠোর বিভাগীয় ব্যবস্থা কিংবা শাস্তিমূলক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

প্রতিকারের অভাব অপরাধ সংগঠকদের সাহস বাড়ায় — পুলিশকর্মী ও মাদক ব্যবসায়ীর অপ্রাকৃতিক মিলবন্ধন অব্যাহত থাকে।

২) বদলিকে শাস্তি হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে — যা পর্যাপ্ত নয়

বদলি নিঃসন্দেহে প্রশাসনিক ব্যবস্থা; কিন্ত যদি কোনো অফিসারের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট অপরাধ প্রমাণিত হয়, তবে শুধু বদলি নয়—বিভাগীয় তদন্ত ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা (বহিষ্কার, সার্বিক জরিমানা, নৈর্ব্যক্তিক তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ ইত্যাদি) জরুরি।

দৃষ্টান্ত স্থাপন না করলে একই ধরনের অনিয়ম বারবার হবে।

৩) সাংবাদিকদের সাথে যোগাযোগে অনীহা — স্বচ্ছতা-হীনতা বাড়াচ্ছে

ঘোর অভিযোগ: সাংবাদিকরা যখন কোনো খবর-তথ্য জিজ্ঞাসা করেন, সার্কেল/ওসি/এসআই/এএসআই পর্যায়ের অনেকেই ফোন রিসিভ করেন না বা যোগাযোগ এড়িয়ে যান।

যদি অফিসাররা অপরাধে অপরাধী না হন, তাহলে সাংবাদিকদের সাথে মুক্ত ও আন্তরিকভাবে কথা বলার কি কোনো আপত্তি আছে? জনগণের কণ্ঠস্বর প্রকাশে সাংবাদিকদের প্রতিবন্ধকতা দেওয়ার কোন বন্ধুপ্রতিম কারণ ভাবা যায় না।

৪) মনোনিবেশকৃত অনুরোধ ও প্রস্তাবনা — আমাদের দাবি
আমরা শ্রদ্ধার সাথে দাবি করছি যে কুমিল্লা জেলার অস্থিতিশীল পরিস্থিতি রোধে আপনার অফিস নিম্নলিখিত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন:

ক) দৃঢ় ও স্বচ্ছ বিভাগীয় ব্যবস্থা চালু করুন — অপরাধী কর্মকর্তা/কনস্টেবলদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চালিয়ে প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক সিদ্ধান্ত (অস্থায়ী বহিষ্কার, স্থায়ী বরখাস্ত, গ্রাহ্য মামলা রেজিস্ট্রেশন) গ্রহণ করুন; শুধুমাত্র বদলি-এ সীমাবদ্ধ না রেখে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন।
খ) মাদক অভিযানের ক্ষেত্রে স্বতন্ত্র মনিটরিং টিম গঠন করুন — বিশেষত সেই থানা/সার্কেল যেখানে পুনরাবৃত্ত অভিযোগ আছে; তৎপরতার রিপোর্ট মাসিক প্রকাশ করুন।
গ) সাংবাদিকদের সঙ্গে যোগাযোগ নীতিমালা প্রণয়ন করুন — জরুরি সংবাদ/অভিযোগে দ্রুত সাড়া দিতে অফিসিয়াল যোগাযোগ নির্দেশনা জারি করুন; সার্কেল স্তরে মিডিয়া লিঙ্ক অফিসার নিয়োগ রাখুন।
ঘ) হোয়াটসঅ্যাপ/অনলাইন নির্দেশনার পাশাপাশি মাঠে কার্যকরী পর্যবেক্ষণ ও ফলপ্রসূ তদন্ত চালু করুন — প্রশমনমূলক নির্দেশনা যথাযথ ফল দিতে হলে মাঠ পর্যায়ে মাননীয় পর্যবেক্ষক থাকা আবশ্যক।
ঙ) দুর্নীতি প্রতিরোধে স্বচ্ছতার জন্য একটি হটলাইন/ই-মেইল/পাবলিক রিমিডিয়েশন সিস্টেম চালু করুন যেখানে নাগরিকরা স্বতন্ত্রভাবে অভিযোগ করতে পারবেন এবং অভিযোগের প্রগতি তিনি জানতে পারবেন।
চ) অভিযোগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা/কনস্টেবলদের দায়িত্ব বরখাস্তের প্রক্রিয়া দ্রুততর করুন এবং তদন্ত চলাকালীন তারা সাধারণ জনসেবার দায়িত্ব থেকে অপসারণ থাকুন।
ছ) সংশ্লিষ্ট থানার কর্মসম্পাদন মূল্যায়ন (KPIs) প্রণয়ন ও প্রকাশ করুন — যাতে জনগণ সহজেই জন-প্রতিবেদন দেখে থানার ফলাফল বিচার করতে পারে।

৫) আমাদের প্রত্যাশা ও শেষ কথা

আমরা কুমিল্লা পুলিশ সুপার হিসেবে আপনার কাছ থেকে দৃঢ় কর্তৃত্ব, ন্যায়পরায়ণ সিদ্ধান্ত ও স্বচ্ছতাপূর্ণ পদক্ষেপ প্রত্যাশা করি।

শুধুমাত্র নির্দেশনা নয়; বাস্তব ও তাত্পর্যপূর্ণ পদক্ষেপ (দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, স্বচ্ছ তদন্ত রিপোর্ট, সাংবাদিকদের সাথে সহনীয় ও দ্রুত যোগাযোগ) গ্রহণ করলেই পুলিশ বাহিনীর আভ্যন্তরীণ সংস্কৃতি বদলাতে পারবে এবং মাদক-অপরাধী মিথস্ক্রিয়ার জয়জয়কার বন্ধ হবে।

সাংবাদিকরা ও নাগরিকরা আপনার নেতৃত্বকে সম্মান করবে যদি আপনি দৃশ্যমান ও সচ্ছ পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করেন — আমরা বিশ্বাস করি আপনি এই দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।

আমরা আশা করবো যে আপনি এই প্রতিবেদনটি গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করে দ্রুত এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন; এবং প্রয়োজনীয় পরিবর্তন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সাংবাদিক সমাজকে নিয়মিতভাবে আপডেট দেবেন। জনস্বার্থে ত্বরিত, দৃশ্যমান ও ন্যায়সঙ্গত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবারও উল্লেখ করছি — বদলি নয়, দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী কঠোর বিভাগীয় ব্যবস্থা চাই

জনপ্রিয়

চট্টগ্রাম লালদীঘি মাঠে বিশাল জনসভায় বৃহত্তর সুন্নী জোট নেতৃবৃন্দ কোনো মহলের ষড়যন্ত্রে জাতীয় নির্বাচন বানচাল হলে দেশ ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়বে

কুমিল্লা জেলা সদর দক্ষিণ থানার সাম্প্রতিক ঘটনাবলী ও সাংবাদিকদের অভিজ্ঞতার আলোকে আমরা অত্যন্ত গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি

প্রকাশের সময় : ০২:৫০:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫

নিয়মিত মাসিক সভা, সার্কেল-ভিত্তিক নির্দেশনা ও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে দেয়া সচেতনতামূলক বার্তাগুলো হয়েছে, কিন্তু মাঠ পর্যায়ে কোনো দৃঢ় ও প্রতীয়মান দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হয়নি — ফলে অনিয়ম-দুর্নীতি ও অপরাধীরাজ জাতীয় কার্যকলাপ অব্যাহত রয়েছে এবং সাধারণ মানুষ ও গণমাধ্যমের আস্থাহীনতা বাড়ছে।

নিম্নলিখিত বিষয়গুলো আমরা স্পষ্টভাবে তুলে ধরছি — এবং দ্রুত, দৃশ্যমান ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানাই:

১) বারবার সতর্কবার্তা এবং নির্দেশনা দিলেও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নেই

অফিসিয়াল সভা ও হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় নীতিগত তাগিদ থাকলেও, অনিয়মের ক্ষেত্রে শুধু বদলি-কর্মর্কম দেখা যায়; কঠোর বিভাগীয় ব্যবস্থা কিংবা শাস্তিমূলক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

প্রতিকারের অভাব অপরাধ সংগঠকদের সাহস বাড়ায় — পুলিশকর্মী ও মাদক ব্যবসায়ীর অপ্রাকৃতিক মিলবন্ধন অব্যাহত থাকে।

২) বদলিকে শাস্তি হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে — যা পর্যাপ্ত নয়

বদলি নিঃসন্দেহে প্রশাসনিক ব্যবস্থা; কিন্ত যদি কোনো অফিসারের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট অপরাধ প্রমাণিত হয়, তবে শুধু বদলি নয়—বিভাগীয় তদন্ত ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা (বহিষ্কার, সার্বিক জরিমানা, নৈর্ব্যক্তিক তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ ইত্যাদি) জরুরি।

দৃষ্টান্ত স্থাপন না করলে একই ধরনের অনিয়ম বারবার হবে।

৩) সাংবাদিকদের সাথে যোগাযোগে অনীহা — স্বচ্ছতা-হীনতা বাড়াচ্ছে

ঘোর অভিযোগ: সাংবাদিকরা যখন কোনো খবর-তথ্য জিজ্ঞাসা করেন, সার্কেল/ওসি/এসআই/এএসআই পর্যায়ের অনেকেই ফোন রিসিভ করেন না বা যোগাযোগ এড়িয়ে যান।

যদি অফিসাররা অপরাধে অপরাধী না হন, তাহলে সাংবাদিকদের সাথে মুক্ত ও আন্তরিকভাবে কথা বলার কি কোনো আপত্তি আছে? জনগণের কণ্ঠস্বর প্রকাশে সাংবাদিকদের প্রতিবন্ধকতা দেওয়ার কোন বন্ধুপ্রতিম কারণ ভাবা যায় না।

৪) মনোনিবেশকৃত অনুরোধ ও প্রস্তাবনা — আমাদের দাবি
আমরা শ্রদ্ধার সাথে দাবি করছি যে কুমিল্লা জেলার অস্থিতিশীল পরিস্থিতি রোধে আপনার অফিস নিম্নলিখিত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন:

ক) দৃঢ় ও স্বচ্ছ বিভাগীয় ব্যবস্থা চালু করুন — অপরাধী কর্মকর্তা/কনস্টেবলদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চালিয়ে প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক সিদ্ধান্ত (অস্থায়ী বহিষ্কার, স্থায়ী বরখাস্ত, গ্রাহ্য মামলা রেজিস্ট্রেশন) গ্রহণ করুন; শুধুমাত্র বদলি-এ সীমাবদ্ধ না রেখে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন।
খ) মাদক অভিযানের ক্ষেত্রে স্বতন্ত্র মনিটরিং টিম গঠন করুন — বিশেষত সেই থানা/সার্কেল যেখানে পুনরাবৃত্ত অভিযোগ আছে; তৎপরতার রিপোর্ট মাসিক প্রকাশ করুন।
গ) সাংবাদিকদের সঙ্গে যোগাযোগ নীতিমালা প্রণয়ন করুন — জরুরি সংবাদ/অভিযোগে দ্রুত সাড়া দিতে অফিসিয়াল যোগাযোগ নির্দেশনা জারি করুন; সার্কেল স্তরে মিডিয়া লিঙ্ক অফিসার নিয়োগ রাখুন।
ঘ) হোয়াটসঅ্যাপ/অনলাইন নির্দেশনার পাশাপাশি মাঠে কার্যকরী পর্যবেক্ষণ ও ফলপ্রসূ তদন্ত চালু করুন — প্রশমনমূলক নির্দেশনা যথাযথ ফল দিতে হলে মাঠ পর্যায়ে মাননীয় পর্যবেক্ষক থাকা আবশ্যক।
ঙ) দুর্নীতি প্রতিরোধে স্বচ্ছতার জন্য একটি হটলাইন/ই-মেইল/পাবলিক রিমিডিয়েশন সিস্টেম চালু করুন যেখানে নাগরিকরা স্বতন্ত্রভাবে অভিযোগ করতে পারবেন এবং অভিযোগের প্রগতি তিনি জানতে পারবেন।
চ) অভিযোগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা/কনস্টেবলদের দায়িত্ব বরখাস্তের প্রক্রিয়া দ্রুততর করুন এবং তদন্ত চলাকালীন তারা সাধারণ জনসেবার দায়িত্ব থেকে অপসারণ থাকুন।
ছ) সংশ্লিষ্ট থানার কর্মসম্পাদন মূল্যায়ন (KPIs) প্রণয়ন ও প্রকাশ করুন — যাতে জনগণ সহজেই জন-প্রতিবেদন দেখে থানার ফলাফল বিচার করতে পারে।

৫) আমাদের প্রত্যাশা ও শেষ কথা

আমরা কুমিল্লা পুলিশ সুপার হিসেবে আপনার কাছ থেকে দৃঢ় কর্তৃত্ব, ন্যায়পরায়ণ সিদ্ধান্ত ও স্বচ্ছতাপূর্ণ পদক্ষেপ প্রত্যাশা করি।

শুধুমাত্র নির্দেশনা নয়; বাস্তব ও তাত্পর্যপূর্ণ পদক্ষেপ (দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, স্বচ্ছ তদন্ত রিপোর্ট, সাংবাদিকদের সাথে সহনীয় ও দ্রুত যোগাযোগ) গ্রহণ করলেই পুলিশ বাহিনীর আভ্যন্তরীণ সংস্কৃতি বদলাতে পারবে এবং মাদক-অপরাধী মিথস্ক্রিয়ার জয়জয়কার বন্ধ হবে।

সাংবাদিকরা ও নাগরিকরা আপনার নেতৃত্বকে সম্মান করবে যদি আপনি দৃশ্যমান ও সচ্ছ পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করেন — আমরা বিশ্বাস করি আপনি এই দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।

আমরা আশা করবো যে আপনি এই প্রতিবেদনটি গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করে দ্রুত এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন; এবং প্রয়োজনীয় পরিবর্তন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সাংবাদিক সমাজকে নিয়মিতভাবে আপডেট দেবেন। জনস্বার্থে ত্বরিত, দৃশ্যমান ও ন্যায়সঙ্গত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবারও উল্লেখ করছি — বদলি নয়, দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী কঠোর বিভাগীয় ব্যবস্থা চাই