০১:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫

কামারখন্দে ৭ম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ ৩ বখাটে গ্রেপ্তার

  • প্রকাশের সময় : ০৫:০৯:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫
  • 31

‎মোঃ মোসলেম উদ্দিন সিরাজী
‎সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি

‎সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে ৭ম শ্রেণির ছাত্রী (১৪) কে সিএনজিতে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে পুলিশ তিন বখাটেকে গ্রেপ্তার করেছে।
‎গত সোমবার ২০ অক্টোবর ও মঙ্গলবার ২১ অক্টোবর, এ বখাটেদের নিজ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, কামারখন্দ উপজেলার জামতৈল গ্রামের আলমের ছেলে মোঃ আকাশ (২১) মোঃ নান্নু সরকারের ছেলে মোঃ আতিক (২৩) এবং কর্ণসূতি গ্রামের মোঃ জাহাঙ্গীর প্রামাণিকের ছেলে নাজমুল হক নয়ন (২০)। তবে মামলার প্রধান আসামি নাইমসহ আরও দুইজন পলাতক রয়েছেন। এর আগে গত সোমবার (২০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা বাদী হয়ে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে কামারখন্দ থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন।

ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী কামারখন্দ উপজেলার জামতৈল ইউনিয়নের কর্ণসূতি গ্রামের বাসিন্দা এবং কর্ণসূতি দাখিল মাদ্রাসার ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত নাইম হোসেন একই উপজেলার চর কামারখন্দ গ্রামের রহমত আলীর ছেলে।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, গত রবিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে ওই শিক্ষার্থী কর্ণসূতি তালুকদার করবস্থান সংলগ্ন দোকানে কলম কেনার জন্য বের হলে রাস্তা থেকে জোর করে সিএনজিতে তুলে নিয়ে উপজেলার জামতৈল সেন্ট্রাল পার্ক সংলগ্ন এলাকার “ডেরা ফাস্ট ফুড এ্যান্ড চাইনিজ রেস্টুরেন্ট”-এর ভিতরে নিয়ে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করা হয়।

এতে সহযোগিতা করে আরও পাঁচ জন। তারা হলো, উপজেলার জামতৈল এলাকার মোঃ ইমরান (২১) পিতা অজ্ঞাত, আলমের ছেলে আকাশ (২১), নান্নু সরকারের ছেলে মোঃ আতিক (২৩), নাছিম উদ্দিন (২০) পিতা অজ্ঞাত, এবং কর্ণসূতি গ্রামের জাহাঙ্গীর প্রামাণিকের ছেলে নাজমুল হক নয়ন (২০) ।

মামলার এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ডেরা ফাস্ট ফুড এ্যান্ড চাইনিজ রেস্টুরেন্টে নাইম নামের ওই বখাটে ছাত্রীটিকে ধর্ষণ করার সময় যাতে ওই ছাত্রীর চিৎকার কেউ শুনতে না পায়, তার জন্য ইমরান (২১), আকাশ (২১), আতিক (২৩), নাছিম উদ্দিন (২০) ও নাজমুল হক নয়ন (২০) রেস্টুরেন্টের গেটে পাহারা দেয় এবং জোরে বক্সে গান বাজায়। ওই ছাত্রীর মা অভিযোগ করে বলেন, “আমার মেয়ে প্রতিদিনের মতো মাদ্রাসায় যায়

মাদ্রাসা ছুটি হওয়ার পরও যখন বাড়ি আসে না, তখন খোঁজাখুঁজি শুরু করি। হঠাৎ অজ্ঞাত এক ব্যক্তি মুঠোফোনে কল দিয়ে জানায়, আপনার মেয়ে অসুস্থ অবস্থায় সিরাজগঞ্জ কমিউনিটি ক্লিনিকে ভর্তি আছে। পরে আমরা সেখানে গিয়ে দেখি আমার মেয়ের অবস্থা খুব খারাপ, পরে তাকে শহীদ এম.মুনসুর আলী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করি। আমার মেয়েকে ওই বখাটেরা জোর করে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেছে।

সোমবার সকালে ডাক্তার তার বিশেষ অঙ্গে অপারেশন করেছেন। শহীদ এম. মুনসুর আলী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের গাইনী বিভাগের ইন্টার্ন চিকিৎসক পার্থ সাহা জানান, ওই ছাত্রীর বিশেষ অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেটি অস্ত্রপচারের মাধ্যমে ঠিক করা হয়েছে।

প্রাথমিকভাবে বলা যায়, জোর করে শারীরিক সম্পর্কের কারণে বিশেষ অঙ্গ এভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, কামারখন্দ সেন্ট্রাল পার্ক সংলগ্ন এলাকার ওই রেস্টুরেন্টে অবিবাহিত কিশোর-কিশোরীরা অসামাজিক কাজ করে।

এছাড়া মাঝে মাঝে সেখানে ছিনতাইয়ের ঘটনাও ঘটে। এজন্য পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন স্থানীয়রা।কামারখন্দ থানার পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই)বাবুল আকতার বলেন, আলামত সংগ্রহের জন্য রেস্টুরেন্টটি বিকেলে বন্ধ রাখা হয়েছে।

অপরাধীদের গ্রেপ্তার চেষ্টা চলছে। কামারখন্দ থানার ওসি আব্দুল লতিফ বলেন, ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছে। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করে এদিন দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

জনপ্রিয়

২০১৮ সালে সংসদে যাওয়া দলীয় প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে বিএনপির মশাল মিছিল

কামারখন্দে ৭ম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ ৩ বখাটে গ্রেপ্তার

প্রকাশের সময় : ০৫:০৯:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫

‎মোঃ মোসলেম উদ্দিন সিরাজী
‎সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি

‎সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে ৭ম শ্রেণির ছাত্রী (১৪) কে সিএনজিতে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে পুলিশ তিন বখাটেকে গ্রেপ্তার করেছে।
‎গত সোমবার ২০ অক্টোবর ও মঙ্গলবার ২১ অক্টোবর, এ বখাটেদের নিজ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, কামারখন্দ উপজেলার জামতৈল গ্রামের আলমের ছেলে মোঃ আকাশ (২১) মোঃ নান্নু সরকারের ছেলে মোঃ আতিক (২৩) এবং কর্ণসূতি গ্রামের মোঃ জাহাঙ্গীর প্রামাণিকের ছেলে নাজমুল হক নয়ন (২০)। তবে মামলার প্রধান আসামি নাইমসহ আরও দুইজন পলাতক রয়েছেন। এর আগে গত সোমবার (২০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা বাদী হয়ে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে কামারখন্দ থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন।

ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী কামারখন্দ উপজেলার জামতৈল ইউনিয়নের কর্ণসূতি গ্রামের বাসিন্দা এবং কর্ণসূতি দাখিল মাদ্রাসার ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত নাইম হোসেন একই উপজেলার চর কামারখন্দ গ্রামের রহমত আলীর ছেলে।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, গত রবিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে ওই শিক্ষার্থী কর্ণসূতি তালুকদার করবস্থান সংলগ্ন দোকানে কলম কেনার জন্য বের হলে রাস্তা থেকে জোর করে সিএনজিতে তুলে নিয়ে উপজেলার জামতৈল সেন্ট্রাল পার্ক সংলগ্ন এলাকার “ডেরা ফাস্ট ফুড এ্যান্ড চাইনিজ রেস্টুরেন্ট”-এর ভিতরে নিয়ে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করা হয়।

এতে সহযোগিতা করে আরও পাঁচ জন। তারা হলো, উপজেলার জামতৈল এলাকার মোঃ ইমরান (২১) পিতা অজ্ঞাত, আলমের ছেলে আকাশ (২১), নান্নু সরকারের ছেলে মোঃ আতিক (২৩), নাছিম উদ্দিন (২০) পিতা অজ্ঞাত, এবং কর্ণসূতি গ্রামের জাহাঙ্গীর প্রামাণিকের ছেলে নাজমুল হক নয়ন (২০) ।

মামলার এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ডেরা ফাস্ট ফুড এ্যান্ড চাইনিজ রেস্টুরেন্টে নাইম নামের ওই বখাটে ছাত্রীটিকে ধর্ষণ করার সময় যাতে ওই ছাত্রীর চিৎকার কেউ শুনতে না পায়, তার জন্য ইমরান (২১), আকাশ (২১), আতিক (২৩), নাছিম উদ্দিন (২০) ও নাজমুল হক নয়ন (২০) রেস্টুরেন্টের গেটে পাহারা দেয় এবং জোরে বক্সে গান বাজায়। ওই ছাত্রীর মা অভিযোগ করে বলেন, “আমার মেয়ে প্রতিদিনের মতো মাদ্রাসায় যায়

মাদ্রাসা ছুটি হওয়ার পরও যখন বাড়ি আসে না, তখন খোঁজাখুঁজি শুরু করি। হঠাৎ অজ্ঞাত এক ব্যক্তি মুঠোফোনে কল দিয়ে জানায়, আপনার মেয়ে অসুস্থ অবস্থায় সিরাজগঞ্জ কমিউনিটি ক্লিনিকে ভর্তি আছে। পরে আমরা সেখানে গিয়ে দেখি আমার মেয়ের অবস্থা খুব খারাপ, পরে তাকে শহীদ এম.মুনসুর আলী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করি। আমার মেয়েকে ওই বখাটেরা জোর করে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেছে।

সোমবার সকালে ডাক্তার তার বিশেষ অঙ্গে অপারেশন করেছেন। শহীদ এম. মুনসুর আলী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের গাইনী বিভাগের ইন্টার্ন চিকিৎসক পার্থ সাহা জানান, ওই ছাত্রীর বিশেষ অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেটি অস্ত্রপচারের মাধ্যমে ঠিক করা হয়েছে।

প্রাথমিকভাবে বলা যায়, জোর করে শারীরিক সম্পর্কের কারণে বিশেষ অঙ্গ এভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, কামারখন্দ সেন্ট্রাল পার্ক সংলগ্ন এলাকার ওই রেস্টুরেন্টে অবিবাহিত কিশোর-কিশোরীরা অসামাজিক কাজ করে।

এছাড়া মাঝে মাঝে সেখানে ছিনতাইয়ের ঘটনাও ঘটে। এজন্য পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন স্থানীয়রা।কামারখন্দ থানার পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই)বাবুল আকতার বলেন, আলামত সংগ্রহের জন্য রেস্টুরেন্টটি বিকেলে বন্ধ রাখা হয়েছে।

অপরাধীদের গ্রেপ্তার চেষ্টা চলছে। কামারখন্দ থানার ওসি আব্দুল লতিফ বলেন, ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছে। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করে এদিন দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।