
মোঃ শাহজাহান বাশার ,সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার
জুলাই জাতীয় সনদের বাস্তবায়নের উপায় ও কৌশল সম্পর্কিত বিস্তারিত সুপারিশমালা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
আজ মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ প্রধান উপদেষ্টার হাতে এই সুপারিশ তুলে দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা পরিষদের অন্যান্য সদস্যসহ জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রতিনিধিরা।
প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার গণমাধ্যমে এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, “জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য যে সুপারিশ জাতীয় ঐকমত্য কমিশন প্রণয়ন করেছে, তা আজ প্রধান উপদেষ্টার হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস কমিশনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবেন বলে জানিয়েছেন।”
সুপারিশ হস্তান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারসহ কমিশনের অন্যান্য সদস্যবৃন্দ।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি প্রফেসর আলী রিয়াজ জানান, জুলাই জাতীয় সনদ দেশের গণতন্ত্র, প্রশাসনিক জবাবদিহি ও দুর্নীতিবিরোধী কাঠামো পুনর্গঠনে একটি যুগান্তকারী নীতিপত্র। কমিশন সুপারিশে সনদের ধারাগুলো বাস্তবায়নের জন্য স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়নের প্রস্তাব দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “জাতীয় ঐকমত্য সৃষ্টির মধ্য দিয়েই রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সুশাসন নিশ্চিত করা সম্ভব। জুলাই সনদ সেই লক্ষ্যেই প্রণীত হয়েছে। এখন আমাদের দায়িত্ব এর সঠিক বাস্তবায়ন।”
এদিকে সুপারিশ হস্তান্তরের পর আজ বিকেল ২টায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে কমিশনের সহসভাপতি প্রফেসর আলী রিয়াজ সাংবাদিকদের ব্রিফ করবেন বলে জানা গেছে। সেখানে জুলাই সনদের মূল কাঠামো, বাস্তবায়নের ধাপ এবং সরকারের প্রতি কমিশনের প্রস্তাবিত পদক্ষেপগুলো বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হবে।
প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার আরও জানান, বিকেলের ব্রিফিংয়ে অধ্যাপক আলী রীয়াজ ছাড়াও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের অন্যান্য সদস্যরাও বক্তব্য রাখবেন এবং সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেবেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কমিশনের এই সুপারিশে নির্বাচন কমিশন সংস্কার, প্রশাসনের জবাবদিহিতা, দুর্নীতি দমন কমিশনের স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, বিচার বিভাগের স্বচ্ছতা, মানবাধিকার সুরক্ষা ও জনঅংশগ্রহণমূলক শাসনব্যবস্থার রূপরেখা তুলে ধরা হয়েছে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মতে, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন হলে দেশে একটি স্থায়ী গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি, জবাবদিহিমূলক প্রশাসন এবং জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।



























