
বাবলু বড়ুয়া চট্টগ্রাম
জনৈক ইফাত আরা চৌধুরী(৪৭) পেশায় একজন গৃহিণী। তার বড় বোন লতিফা আফরোজ চৌধুরী(৬১) ও তার বাসা পাশাপাশি। বোন লতিফা আফরোজ চৌধুরী ক্যান্সারের রোগী হওয়ায় ইং ৩০/৮/২৫ তারিখ তার বাসা তালাবদ্ধ করে চিকিৎসার জন্য ঢাকা যায়। ইং-১১/৯/২০২৫ তারিখ সকাল অনুমান ০৭.০০ ঘটিকার সময় জনৈক ইফাত আরা চৌধুরীর স্বামী মোঃ নিয়াজ আলী তাদের বাসার গেইট খুলতে গিয়ে দেখতে পান, সদরঘাট থানাধীন ১১৪ পূর্ব মাদারবাড়ি রেল গেইট লিগ্যাল হোটেলের পশ্চিম পাশে চেয়ারম্যান সাহেবের বাড়ি তথা বড় বোন লতিফা আফরোজ চৌধুরীর জানালা খোলা ও জানালার গ্রিল কাঁটা। অতঃপর আত্বীয় সাজ্জাদ হোসেন মিতু(৫৫) এর নিকট থেকে বাসার চাবি নিয়ে ঘরে প্রবেশ করে দেখতে পান, ঘরের জিনিসপত্র এলোমেলো ও ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। তাঁর বোনের দেয়া তথ্য ও এজাহারের বর্ণনা মতে সর্বমোট অনুমান ৩০ ভরি স্বর্ণালংকার ও ৮ ভরি রুপা সহ নগদ ৫০,০০০/= টাকা অজ্ঞাতনামা চোর/চোরেরা চুরি করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে সিসি ক্যামেরা ফুটেজ চেক করে দেখতে পান, ইং ১১/৯/২৫ তারিখ ভোর ০৪.০০ ঘঃ হতে ভোর ০৫.৩০ ঘটিকার মধ্যবর্তী সময়ে অজ্ঞাতনামা চোর/চোরেরা উল্লিখিত মালামাল চুরি করে নিয়ে যায়। উল্লিখিত মালামাল ঘটনাস্থলের আশপাশ ও বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে কোথাও না পেয়ে জনৈক ইফাত আরা চৌধুরী ইং ১২/০৯/২৫ তারিখ থানায় হাজির হয়ে অজ্ঞাতনামা চোর/চোরদের বিরুদ্ধে চুরির বিষয়ে এজাহার দায়ের করলে সদরঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ সদরঘাট থানার মামলা নং-০৪, তারিখ-১২/০৯/২৫ খ্রীঃ, ধারা-৪৫৭/৩৮০ পেনাল কোড রুজু পূর্বক মামলার তদন্তভার এসআই(নিঃ) সৈয়দ ফকরুল ইসলাম এর নিকট ন্যস্ত করেন।
মামলা রুজু পরবর্তী সদরঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ জনাব মোঃ আবদুর রহিম এর নেতৃত্বে পুলিশ পরিদর্শক(তদন্ত) জনাব মোঃ হাবিব সাত্তি, এসআই মোহাম্মদ শাহাদাত হোছাইন, এসআই সৈয়দ ফকরুল ইসলাম, এএসআই মোঃ ইসমাইল হোসেন সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্স সহ সদরঘাট থানার একটি আভিযানিক টিম মামলার ঘটনাস্থল ও তার আশপাশের অসংখ্য সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে মামলার ঘটনার সাথে জড়িত আসামী মোঃ রুবেল প্রঃ সুমন (২৯) কে সনাক্ত পূর্বক ইং ১৮/১০/২৫ তারিখ ০২.০০ ঘটিকার সময় কর্ণফুলী থানা এলাকা হতে কর্ণফুলী থানা পুলিশের সহায়তায় গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, সে ও ঘটনায় জড়িত অপর পলাতক আসামী মোঃ জুয়েল প্রকাশ কসাই জুয়েল (৩৮) সহ তার সহযোগীরা অত্র মামলার ঘটনার তারিখ ও সময়ে উল্লিখিত ঘটনাস্থল থেকে বর্ণিত মালামাল চুরি করেছে। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ রুবেল প্রঃ সুমন (২৯) স্বীকার করে চোরাইকৃত স্বর্ণ ও টাকা পলাতক আসামী মোঃ জুয়েল প্রকাশ কসাই জুয়েল (৩৮) এর হেফাজতে রয়েছে। পরবর্তীতে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ রুবেল প্রঃ সুমন (২৯)’র সনাক্ত ও দেখানো মতে ইং ১৮/১০/২৫ তারিখ সকাল ০৬.৩০ ঘটিকার সময় পলাতক আসামি মোঃ জুয়েল প্রকাশ কসাই জুয়েল(৩৮) কে ডবলমুরিং থানা এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার পরবর্তীতে উভয় আসামি জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে গ্রেফতারকৃত আসামী জুয়েল প্রঃ কসাই জুয়েল(৩৮) জানায়, কিছু চোরাই স্বর্ণ ও চোরাই স্বর্ণ বিক্রির নগদ টাকা তার বাসায় রয়েছে। অতঃপর উভয় আসামীর সনাক্ত এবং উপস্থাপন মতে ইং ১৮/১০/২৫ তারিখ সকাল ০৭.২০ ঘটিকার সময় ডবলমুরিং থানাধীন নাজিরপুল পাঠানটুলি আলী মিয়া মুন্সি বাড়িস্থ আসামী মোঃ জুয়েল প্রকাশ কসাই জুয়েল (৩৮)’র বাসা হতে চোরাই স্বর্ণ বিক্রির নগদ ৫৪,৭৮০/-(চুয়ান্ন হাজার সাত শত আশি) টাকা এবং ০১ টি স্বর্ণের গলার হার, ওজন ৩২.১৪ গ্রাম উদ্ধার পূর্বক এসআই সৈয়দ ফকরুল ইসলাম সাক্ষীদের উপস্থিতিতে বিধি মোতাবেক জব্দ তালিকা মূলে জব্দ করে। জব্দকৃত আসামি ও মালামাল হেফাজতে নেয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গ্রেফতারকৃত আসামিদ্বয়কে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়। আসামিদ্বয়কে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণের পূর্বে দফায় দফায় ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে উভয় আসামি জানায়, কিছু চোরাই স্বর্ণ অপর পলাতক শিবু ধর(৪৪) এর নিকট বিক্রি করেছে। অপরদিকে সদরঘাট থানা পুলিশ অবশিষ্ট চোরাই মালামাল উদ্ধার ও ঘটনায় জড়িত পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে অভিযান অব্যাহত রাখে।
পরবর্তীতে সদরঘাট থানার আভিযানিক টিম বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দকৃত আসামিদ্বয়ের দেয়া তথ্য ও বর্ণনা মতে এবং গুপ্তচরের সহায়তায় ইং ১৮/১০/২৫ তারিখ ১৭.৪৫ ঘটিকার সময় অপর পলাতক আসামি শিবু ধর(৪৪) কে পাহাড়তলী থানা এলাকা হতে পাহাড়তলী থানা পুলিশের সহায়তায় গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার পরবর্তী জিজ্ঞাসাবাদে সে আসামি রুবেল প্রঃ সুমন ও জুয়েল প্রঃ কসাই জুয়েল দ্বয়ের নিকট থেকে চোরাই স্বর্ণ ক্রয়ের কথা স্বীকার করে এবং উক্ত স্বর্ণ কোতোয়ালি থানাধীন হাজারী গলির এক দোকানে রেখেছে মর্মে জানায়। অতঃপর তাঁর স্বীকারোক্তি ও দেখানো মতে ইং ১৮/১০/২৫ তারিখ ১৯.৪৫ ঘটিকার সময় কোতোয়ালি থানাধীন হাজারী গলিস্থ দশমহাবিদ্যা মন্দির সংলগ্ন দত্ত শিল্পালয় হতে ০২ টি স্বর্ণের চুড়ি, ওজন ২৪.৯৬ গ্রাম এর সমপরিমাণ গলানো স্বর্নের অংশবিশেষ উদ্ধার পূর্বক এসআই সৈয়দ ফকরুল ইসলাম বিধি মোতাবেক সাক্ষীদের উপস্থিতিতে জব্দ তালিকা মূলে জব্দ করে। জব্দকৃত মালামাল হেফাজতে নেয়। পরবর্তীতে ইং ১৯/১০/২৫ তারিখে উক্ত আসামিকে চালান মোতাবেক বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। অবশিষ্ট চোরাই মালামাল উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামি রুবেল প্রঃ সুমন ও জুয়েল প্রঃ কসাই জুয়েল দ্বয়ের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে



























