১২:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

উল্লাপাড়ায় পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও চাঁদা দাবির অভিযোগে মামলা

  • প্রকাশের সময় : ০৯:৩২:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৫
  • 53

মোঃ মোসলেম উদ্দিন সিরাজী ‎সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি


‎সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলায় তিনজন পুলিশ সদস্যসহ মোট চারজনের বিরুদ্ধে এক শিক্ষার্থীকে নির্যাতন করে শ্রবণশক্তি বিনষ্ট করা এবং ১ লাখ ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
‎বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) উল্লাপাড়া আমলি আদালতে ভুক্তভোগী জাহিদুল ইসলাম (১৯) মামলাটি দায়ের করেন। তিনি উপজেলার কানসোনা গ্রামের বাসিন্দা এবং উল্লাপাড়া মার্চেন্ট সরকারি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী। মামলার আসামি তিনজন পুলিশ সদস্যরা হলেন- উল্লাপাড়া মডেল থানা পুলিশের উপ-পুলিশ পরিদর্শক মো. আব্দুল হালিম, এসআই মো. মেজবাহ ও এএসআই আব্দুস সাত্তার। এই মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে উপজেলার বালশাবাড়ি গ্রামের মো: রুবেল নামের এক যুবককে। এদিকে উল্লাপাড়া আমলি আদালতের বিচারক ইখলাস উদ্দীন বাদীর অভিযোগ গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সিরাজগঞ্জকে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আদেশ দিয়েছেন। বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজুরুল ইসলাম বলেন, উল্লাপাড়া থানা আমলী আদালতের বিচারক ইখলাস উদ্দীন বাদীর অভিযোগ গ্রহণ করে পিবিআই সিরাজগঞ্জকে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আদেশ দিয়েছেন। মামলার আসামি উল্লাপাড়া মডেল থানা পুলিশের উপ-পুলিশ পরিদর্শক আব্দুল হালিম বলেন, আপনি যেহেতু সাংবাদিক মানুষ, যেটি অথেনটিক খবর সেটিই প্রকাশ করবেন। আমি একটি খুনের তদন্তে ব্যস্ত আছি, পরে কথা হবে। এ বিষয়ে উল্লাপাড়া মডেল থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রাকিবুল হাসান বলেন, ঘটনাটি সত্য নয়। তারা একটি অভিযোগ তদন্তে গিয়েছিল , এইজন্য তিনি মামলাটি করেছে। এতটুকুই আমরা জানি। তদন্ত হলে ঘটনার সত্যতা উদ্‌ঘাটন হবে। মামলার অভিযোগে বলা হয়, প্রধান আসামি মো. রুবেলের সঙ্গে শিক্ষার্থী জাহিদুলের ফেসবুকে পরিচয় ছিল এবং প্রায়ই ফোনে কথা হতো। ৯ আগস্ট রাতে রুবেল ফোন করে তাকে কৃষকগঞ্জ বাজারে দেখা করতে বলেন, কিন্তু তিনি অপারগতা জানান। কিছুক্ষণ পর রুবেল আবার ফোন করে গ্রামের মসজিদের কাছে থাকার কথা জানালে জাহিদুল সেখানে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করেন। তখন রুবেল মোটরসাইকেল চুরির কথা উল্লেখ করে বাড়ি ফিরে যান। ঘটনার দিন ১০ আগস্ট রাত ১টা ২৮ মিনিটে রুবেল আবার ফোন করে জাহিদুলকে বাড়ির পাশে ডাকেন। সেখানে গিয়ে তিনি দেখেন, রুবেলের সঙ্গে আরও তিনজন পুলিশ কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। তারা মোটরসাইকেল চুরির বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নামে তাকে ঘিরে ধরে এলোপাতাড়ি মারধর করেন এবং ১ লাখ ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে এসআই হালিম শিক্ষার্থী জাহিদুলের ডান কানে প্রচণ্ড থাপ্পড় মারেন, এতে কানের পর্দা ফেটে রক্তক্ষরণ হয় এবং তিনি শ্রবণশক্তি হারান। এ সময় অন্য আসামিরা গলা চেপে ধরে ও লাথি মেরে কোমর, পিঠ ও হাতে আঘাত করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠান। মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, ঘটনার দুই দিন পর এএসআই আব্দুস সাত্তার জাহিদুলের বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারকে হুমকি দেন এবং এক সাক্ষীর কাছে থেকে ২০ হাজার টাকা আদায় করেন। বাকি টাকার জন্য আসামিরা এখন ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন এবং চাকরি ও জীবন নষ্ট করার হুমকি দিচ্ছেন।

জনপ্রিয়

উখিয়ায় আমির হোসেনের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক জমি দখল ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে

উল্লাপাড়ায় পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও চাঁদা দাবির অভিযোগে মামলা

প্রকাশের সময় : ০৯:৩২:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৫

মোঃ মোসলেম উদ্দিন সিরাজী ‎সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি


‎সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলায় তিনজন পুলিশ সদস্যসহ মোট চারজনের বিরুদ্ধে এক শিক্ষার্থীকে নির্যাতন করে শ্রবণশক্তি বিনষ্ট করা এবং ১ লাখ ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
‎বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) উল্লাপাড়া আমলি আদালতে ভুক্তভোগী জাহিদুল ইসলাম (১৯) মামলাটি দায়ের করেন। তিনি উপজেলার কানসোনা গ্রামের বাসিন্দা এবং উল্লাপাড়া মার্চেন্ট সরকারি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী। মামলার আসামি তিনজন পুলিশ সদস্যরা হলেন- উল্লাপাড়া মডেল থানা পুলিশের উপ-পুলিশ পরিদর্শক মো. আব্দুল হালিম, এসআই মো. মেজবাহ ও এএসআই আব্দুস সাত্তার। এই মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে উপজেলার বালশাবাড়ি গ্রামের মো: রুবেল নামের এক যুবককে। এদিকে উল্লাপাড়া আমলি আদালতের বিচারক ইখলাস উদ্দীন বাদীর অভিযোগ গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সিরাজগঞ্জকে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আদেশ দিয়েছেন। বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজুরুল ইসলাম বলেন, উল্লাপাড়া থানা আমলী আদালতের বিচারক ইখলাস উদ্দীন বাদীর অভিযোগ গ্রহণ করে পিবিআই সিরাজগঞ্জকে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আদেশ দিয়েছেন। মামলার আসামি উল্লাপাড়া মডেল থানা পুলিশের উপ-পুলিশ পরিদর্শক আব্দুল হালিম বলেন, আপনি যেহেতু সাংবাদিক মানুষ, যেটি অথেনটিক খবর সেটিই প্রকাশ করবেন। আমি একটি খুনের তদন্তে ব্যস্ত আছি, পরে কথা হবে। এ বিষয়ে উল্লাপাড়া মডেল থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রাকিবুল হাসান বলেন, ঘটনাটি সত্য নয়। তারা একটি অভিযোগ তদন্তে গিয়েছিল , এইজন্য তিনি মামলাটি করেছে। এতটুকুই আমরা জানি। তদন্ত হলে ঘটনার সত্যতা উদ্‌ঘাটন হবে। মামলার অভিযোগে বলা হয়, প্রধান আসামি মো. রুবেলের সঙ্গে শিক্ষার্থী জাহিদুলের ফেসবুকে পরিচয় ছিল এবং প্রায়ই ফোনে কথা হতো। ৯ আগস্ট রাতে রুবেল ফোন করে তাকে কৃষকগঞ্জ বাজারে দেখা করতে বলেন, কিন্তু তিনি অপারগতা জানান। কিছুক্ষণ পর রুবেল আবার ফোন করে গ্রামের মসজিদের কাছে থাকার কথা জানালে জাহিদুল সেখানে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করেন। তখন রুবেল মোটরসাইকেল চুরির কথা উল্লেখ করে বাড়ি ফিরে যান। ঘটনার দিন ১০ আগস্ট রাত ১টা ২৮ মিনিটে রুবেল আবার ফোন করে জাহিদুলকে বাড়ির পাশে ডাকেন। সেখানে গিয়ে তিনি দেখেন, রুবেলের সঙ্গে আরও তিনজন পুলিশ কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। তারা মোটরসাইকেল চুরির বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নামে তাকে ঘিরে ধরে এলোপাতাড়ি মারধর করেন এবং ১ লাখ ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে এসআই হালিম শিক্ষার্থী জাহিদুলের ডান কানে প্রচণ্ড থাপ্পড় মারেন, এতে কানের পর্দা ফেটে রক্তক্ষরণ হয় এবং তিনি শ্রবণশক্তি হারান। এ সময় অন্য আসামিরা গলা চেপে ধরে ও লাথি মেরে কোমর, পিঠ ও হাতে আঘাত করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠান। মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, ঘটনার দুই দিন পর এএসআই আব্দুস সাত্তার জাহিদুলের বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারকে হুমকি দেন এবং এক সাক্ষীর কাছে থেকে ২০ হাজার টাকা আদায় করেন। বাকি টাকার জন্য আসামিরা এখন ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন এবং চাকরি ও জীবন নষ্ট করার হুমকি দিচ্ছেন।