০১:৪৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫

মাদক একটি ভয়াবহ সামাজিক ব্যাধি

  • প্রকাশের সময় : ১১:৩৫:৫৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
  • 16

আমাদের দেশে মুঘল আমল থেকে হুঁকার প্রচলন ছিল কালক্রমে গ্রামে গঞ্জে সকাল কিংবা বৈকালিক আসরে মিয়াভাই বলে একে অপরকে হুঁকা/হুঁক্কা খাওয়ার জন্য ডাকতো। প্রতি ঘরের বেড়াতে ঝুলানো থাকতো হুঁকা।

সময়ের সাথে কাগজে পেচিয়ে বিড়ি, সিগারেট বাজারে আসে এবং হুক্কা ও সিগারেট এক পর্যায়ে বিলুপ্ত হয়ে নেশা জাতীয় হিরোইন, ফেনসিডিল, ইয়াবা,আফিম,গাজা, কোকেন ইত্যাদির মত ভয়াবহ মাদক স্থান পায়।

 

যেখানে সিগারেটের ধোয়ায় যে দূষণটা তৈরি হয় তা আয়ত্বের বাইরে নিয়ে যেতে ঘন্টায় প্রায় ৮ কিলোমিটার বাতাসের গতির দরকার হয়, সেখানে মরণব্যাধি তন্দ্রাচ্ছন্ন নেশার ক্ষতিটা কতটুকু? এই মরণ নেশা মাদক পার্শ্ববর্তী ভারত থেকে বিশেষ করে কুমিল্লায় ত্রিপুরা রাজ্য থেকে অনায়াসে আমাদের এলাকায় প্রবেশ করে।

গবেষণার ফলাফলের অংশে বলা হয় দেশে প্রাক্কলিত মাদকাসক্ত ব্যক্তির সংখ্যা ৮৩ লাখ।

যা দেশের মোট জনসংখ্যার ৪.৮৯ শতাংশ। আমাদের কুমিল্লা জেলার গ্রাম-গঞ্জ আজ যেন মাদকে ভাসছে। এমন পরিস্থিতিতে ২৬ জুন পালিত হয় আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী দিবস।বাংলাদেশ মাদক উৎপাদনকারী দেশ না হয়েও ভৌগোলিকভাবে মাদকের ঝুঁকিতে রয়েছে। ভারত মাদক উৎপাদন করে শুধু বাংলাদেশের জন্য, যা বিক্রি করে তাদের দেশের অর্থনৈতিক স্বাস্থ্য মোটা তাজা হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক মাদক চোরাচালানের পথ হিসাবে গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেল (মিয়ানমার,লাউস ও থাইল্যান্ডের সীমানা), গোল্ডেন ক্রিসেন্ট (ইরান, আফগানিস্তানও পাকিস্তান) এবং গোল্ডেন ওয়েজের (ভারতের হিমাচল, উত্তর প্রদেশ, অরুণাচল, নেপাল ও ভুটানের কিছু অংশ) একেবারে কেন্দ্রে অবস্থান হওয়ায় এমন ঝুঁকিতে বাংলাদেশ।মাদকাসক্তরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কিডনি নষ্ট হচ্ছে।

এতে বিপুল অর্থ খরচ হচ্ছে। দেশ থেকে ও বিপুল অর্থ পাচার হয়ে যাচ্ছে। তরুণদের একাংশের জীবন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। দাম্পত্যে বিপর্যয় দেখা দিচ্ছে অহরহ।উল্লেখ্য আমাদের দেশের কোন কোন দরবারে গাজা খাওয়ার অভ্যাস আছে। তাদের বক্তব্য হচ্ছে গাজা খেয়ে চোখ লাল না করলে আরশের আল্লাহকে দেখা যায় না।

দেশের বিভিন্ন অস্থিরতার সুযোগে কারবারটা জমে উঠছে ব্যাস। কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলা ভারতীয় ত্রিপুরা রাজ্যের সীমান্ত এলাকা হওয়ায় পাচোড়া,নগর, নবীয়াবাদ,শশীদল, গিলাতলাসহ কয়েকটি স্পট গুরুত্বপূর্ণ মাদকের পথ(রুট)হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠে। মাদক বিরোধী অভিযানে ছোট কারবারিরা কিছুটা শাস্তির আওতায় আসলেও পিরামিদের ন্যায় বসে থাকা শীর্ষবিন্দুতে সিনিয়র বস,টপ বসরা থাকে ধরাছোঁয়ার বাইরে।

কথা উঠছে মাদক প্রতিরোধের সঙ্গে জড়িত সংস্থাগুলো কেউ কেউ নিজেরাই এ কারবারে জড়িয়ে পড়ছে। আর এ কারণেই জিরো টলারেন্স ঘোষণার পরেও মাদকের লাগাম টানা যাচ্ছে না।মাদকের এই বিস্তারের কারণে একই সময় অন্যান্য অপরাধ যেমন ধর্ষণ, ছিনতাই,চুরি,ডাকাতি ভয়াবহরূপ ধারণ করছে গ্রামীণ সমাজে।সমন্বিত উদ্যোগ ও জিরো টলারেন্স অর্থে যা বুঝায় সেই পদক্ষেপ ছাড়া মাদক নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।আসুন মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হই।

জনপ্রিয়

অমর একুশে জুলাই -শহীদ স্মরণে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানালেন, মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়

মাদক একটি ভয়াবহ সামাজিক ব্যাধি

প্রকাশের সময় : ১১:৩৫:৫৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫

আমাদের দেশে মুঘল আমল থেকে হুঁকার প্রচলন ছিল কালক্রমে গ্রামে গঞ্জে সকাল কিংবা বৈকালিক আসরে মিয়াভাই বলে একে অপরকে হুঁকা/হুঁক্কা খাওয়ার জন্য ডাকতো। প্রতি ঘরের বেড়াতে ঝুলানো থাকতো হুঁকা।

সময়ের সাথে কাগজে পেচিয়ে বিড়ি, সিগারেট বাজারে আসে এবং হুক্কা ও সিগারেট এক পর্যায়ে বিলুপ্ত হয়ে নেশা জাতীয় হিরোইন, ফেনসিডিল, ইয়াবা,আফিম,গাজা, কোকেন ইত্যাদির মত ভয়াবহ মাদক স্থান পায়।

 

যেখানে সিগারেটের ধোয়ায় যে দূষণটা তৈরি হয় তা আয়ত্বের বাইরে নিয়ে যেতে ঘন্টায় প্রায় ৮ কিলোমিটার বাতাসের গতির দরকার হয়, সেখানে মরণব্যাধি তন্দ্রাচ্ছন্ন নেশার ক্ষতিটা কতটুকু? এই মরণ নেশা মাদক পার্শ্ববর্তী ভারত থেকে বিশেষ করে কুমিল্লায় ত্রিপুরা রাজ্য থেকে অনায়াসে আমাদের এলাকায় প্রবেশ করে।

গবেষণার ফলাফলের অংশে বলা হয় দেশে প্রাক্কলিত মাদকাসক্ত ব্যক্তির সংখ্যা ৮৩ লাখ।

যা দেশের মোট জনসংখ্যার ৪.৮৯ শতাংশ। আমাদের কুমিল্লা জেলার গ্রাম-গঞ্জ আজ যেন মাদকে ভাসছে। এমন পরিস্থিতিতে ২৬ জুন পালিত হয় আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী দিবস।বাংলাদেশ মাদক উৎপাদনকারী দেশ না হয়েও ভৌগোলিকভাবে মাদকের ঝুঁকিতে রয়েছে। ভারত মাদক উৎপাদন করে শুধু বাংলাদেশের জন্য, যা বিক্রি করে তাদের দেশের অর্থনৈতিক স্বাস্থ্য মোটা তাজা হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক মাদক চোরাচালানের পথ হিসাবে গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেল (মিয়ানমার,লাউস ও থাইল্যান্ডের সীমানা), গোল্ডেন ক্রিসেন্ট (ইরান, আফগানিস্তানও পাকিস্তান) এবং গোল্ডেন ওয়েজের (ভারতের হিমাচল, উত্তর প্রদেশ, অরুণাচল, নেপাল ও ভুটানের কিছু অংশ) একেবারে কেন্দ্রে অবস্থান হওয়ায় এমন ঝুঁকিতে বাংলাদেশ।মাদকাসক্তরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কিডনি নষ্ট হচ্ছে।

এতে বিপুল অর্থ খরচ হচ্ছে। দেশ থেকে ও বিপুল অর্থ পাচার হয়ে যাচ্ছে। তরুণদের একাংশের জীবন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। দাম্পত্যে বিপর্যয় দেখা দিচ্ছে অহরহ।উল্লেখ্য আমাদের দেশের কোন কোন দরবারে গাজা খাওয়ার অভ্যাস আছে। তাদের বক্তব্য হচ্ছে গাজা খেয়ে চোখ লাল না করলে আরশের আল্লাহকে দেখা যায় না।

দেশের বিভিন্ন অস্থিরতার সুযোগে কারবারটা জমে উঠছে ব্যাস। কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলা ভারতীয় ত্রিপুরা রাজ্যের সীমান্ত এলাকা হওয়ায় পাচোড়া,নগর, নবীয়াবাদ,শশীদল, গিলাতলাসহ কয়েকটি স্পট গুরুত্বপূর্ণ মাদকের পথ(রুট)হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠে। মাদক বিরোধী অভিযানে ছোট কারবারিরা কিছুটা শাস্তির আওতায় আসলেও পিরামিদের ন্যায় বসে থাকা শীর্ষবিন্দুতে সিনিয়র বস,টপ বসরা থাকে ধরাছোঁয়ার বাইরে।

কথা উঠছে মাদক প্রতিরোধের সঙ্গে জড়িত সংস্থাগুলো কেউ কেউ নিজেরাই এ কারবারে জড়িয়ে পড়ছে। আর এ কারণেই জিরো টলারেন্স ঘোষণার পরেও মাদকের লাগাম টানা যাচ্ছে না।মাদকের এই বিস্তারের কারণে একই সময় অন্যান্য অপরাধ যেমন ধর্ষণ, ছিনতাই,চুরি,ডাকাতি ভয়াবহরূপ ধারণ করছে গ্রামীণ সমাজে।সমন্বিত উদ্যোগ ও জিরো টলারেন্স অর্থে যা বুঝায় সেই পদক্ষেপ ছাড়া মাদক নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।আসুন মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হই।