
স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হয় বিদেশী প্রসাধনী, এ বিষয়ে নেই কোনো কাগজপত্রও। উৎপাদিত ভেজাল প্রসাধনী ঢাকার লালবাগ ও চকবাজার এর বিভিন্ন অসাধু পাইকারী ও খুচরা ব্যবসায়ীদের নিকট সরবরাহ করতো প্রতারক চক্রটি। এমনকি অনেক অসাধু ব্যবসায়ী সেই ভেজাল পণ্য সস্তায় কিনে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চোখ ধাঁধানো বিজ্ঞাপন দিয়ে দেদারসে বিক্রি করতো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সমস্ত গোমর ফাঁস হয়ে ধরা পড়লো সিআইডি’র একটি ভেজাল-বিরোধী বিশেষ অভিযানে গ্রেফতার হয়েছে প্রতারক চক্রের ০১ সদস্য।
গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির নাম মো. হৃদয় হোসেন (২৫), পিতা- মো. জহির, মাতা- রাহেমা, সাং- পুরাতন ভাড়ালিয়া, পোস্ট- আটি বাজার, থানা- কেরাণীগঞ্জ মডেল থানা, জেলা- ঢাকা। গ্রেফতারকালীন তার কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ বিদেশি ভেজাল প্রসাধনী ও মোড়ক উদ্ধার করা হয়। গত ২৪ জুন ২০২৫ দিবাগত রাতে ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন পুরাতন ভাড়ালিয়া এলাকায় সিআইডি ঢাকা জেলার একটি ভেজাল-বিরোধী বিশেষ অভিযানে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ বিষয়ে কেরাণীগঞ্জ মডেল থানায় মামলা নং- ৪৪, তারিখ-২৫/০৬/২০২৫ খ্রি., ধারা- ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন এর ২৫-গ(২)/২৫(ঘ) রুজু করা হয়েছে।
জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সিআইডি’র বিশেষ টিম ভেজাল প্রসাধনী সামগ্রী কারখানায় উৎপাদন ও মোড়কজাত করা অবস্থায় মো. হৃদয় হোসেন (২৫) কে গ্রেফতার করে এবং তার তথ্যের ভিত্তিতে মোট ০৯টি আইটেমের ১০৭০ প্যাকেট বিভিন্ন রকম নকল ও ভেজাল বিদেশী প্রসাধনী সামগ্রী এবং ২০০ পিস খালি মোড়ক উদ্ধার করে। আইটেমগুলো হলঃ ১৪০ (একশত চল্লিশ) পিস Kem Cot Thai Whitening Body Cream; ১৪০ (একশত চল্লিশ) পিস L`Avenu Whitening Body Cream; ১৭০ (একশত সত্তর) পিস ORGANIC HAIRFALL OIL; ১৪০(একশত চল্লিশ) পিস BODY WHITENING CREAM; ১৪০ (একশত চল্লিশ) পিস KEM BO Whitening Body Cream, ১৪০ (একশত চল্লিশ) পিস OSUFI, Whitening Body Cream; ৬০ (ষাট) পিস WHITENING BODY LOTION; ৫০ (পঞ্চাশ) পিস WHITENING BODY LOTION, ৯০ (নব্বই) পিস Korean Fair Look Permanent Whitening Body Lotion, এবং ২০০ (দুইশত) পিস New Fresh & White, Skin Body Lotion, Net Wt. 300 ml এর মোড়ক।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত মো. হৃদয় হোসেন (২৫) জানায়, বিদেশি এই সমস্ত প্রসাধনী সামগ্রী বাংলাদেশে উৎপাদন বা আমদানি হয় না। চক্রের অন্যান্য সদস্যরা বিদেশের লাগেজ পার্টির মাধ্যমে স্যাম্পল এনে তা কপি করে এবং স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করে। এ উৎপাদন সংক্রান্তে তাদের কোন কাগজপত্র নেই। উক্ত প্রসাধনী সামগ্রী তৈরী করে সে লালবাগ ও চকবাজার এর বিভিন্ন অসাধু ব্যবসায়ীদের নিকট সরবারাহ করে এবং পরবর্তীতে তারা বিদেশী প্রসাধনী বলে স্থানীয় পাইকারী ও খুচরা ক্রেতা সাধারন এর কাছে চড়া দামে বিক্রি করে ।
এছাড়াও অনেক কাস্টমার তার কাছ থেকে মাল নিয়ে স্যোসাল মিডিয়া প্ল্যাটফরমে চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে অনলাইনেও প্রচুর বিক্রি করে মর্মে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়। গ্রেফতারকৃতকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
মামলাটি বর্তমানে সিআইডি এর ঢাকা জেলা ইউনিটে তদন্তাধীন রয়েছে। পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, প্রতারক চক্রের অপরাপর সদস্যদের সনাক্ত ও গ্রেফতার করার স্বার্থে তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।