
মোঃ মোসলেম উদ্দিন সিরাজী সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি
সিরাজগঞ্জ- ৪ (উল্লাপাড়া) আসন কে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যেই নির্বাচনী উত্তাপ শুরু হয়েছে। এই আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন পুলিশ বাহিনীর সাবেক ডিআইজি (অব:) খান সাঈদ হাসান জ্যোতি। তাঁর সংগ্রামী জীবনী, সততা ও ত্যাগের ইতিহাস তাঁকে সাধারণ মানুষের কাছে এক অনন্য মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করেছে। খান সাঈদ হাসান শৈশবেই হারান তার বাবাকে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকবাহিনীর হাতে। এই ব্যক্তিগত বেদনাকে শক্তিতে রূপান্তর করে তিনি একের পর এক সাফল্য অর্জন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিতে স্নাতক ডিগ্রি শেষে ১৯৮৫ সালের ৭ম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারে প্রথম স্থান অর্জন করেন। পুলিশ জীবনে পেয়েছেন বেস্ট অফিসার ট্রফি (সোর্ড অব অনার), পিপিএম পদক এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে বিশেষ অবদানের জন্য জাতিসংঘের পদক। ব্যক্তিজীবনে জ্যোতির দুই ছেলে ও এক মেয়ের সফল সন্তানদের গর্বিত পিতা। তাঁর বড় পুত্র-দম্পতি ডাক্তার, তারা অস্ট্রেলিয়া কর্মরত। কন্যা-দম্পতি ইঞ্জিনিয়ার, তারা সিঙ্গাপুরে কর্মরত। অবিবাহিত অপরপুত্র ব্যারিস্টার, ঢাকা হাইকোর্টে চর্চা করেন। তিনি নিয়মিত সপ্তাহে দুই দিন রোজা রাখেন এবং বারো বছর বয়স থেকেই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে আসছেন। তিনি বলেন ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ সরকার তাকে চাকরি থেকে অপসারণ করে ও এসডি করে দেয় , ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় সাজানো সাক্ষ্য দিতে অস্বীকৃতি জানানোর পর তাকে ও আসামি করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, তাকে গুম বা ক্রসফায়ারে হত্যার পরিকল্পনা ও হয়েছিল। ফলে দীর্ঘ ৮ বছর আত্মগোপনে থাকতে বাধ্য হন। তিনি ২০১৯ সালে আদালতে আত্মসমর্পণের পর ২০২২ সালে মুক্তি পান। ২০২৪ সালের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর তিনি আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন। ডিআইজি (অব:) খান সাঈদ হাসান জ্যোতি বর্তমানে বিএনপির আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছেন। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উল্লাপাড়া আসনে তিনি বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী। তিনি বলেন, আমার জীবনটা কখনো স্বাভাবিক ছিলো না। সংগ্রাম, ত্যাগ আর প্রতিকূলতা পেরিয়ে আজ এখানে দাঁড়িয়েছি। এখন জনগণের সেবা করাই আমার একমাত্র লক্ষ্য। উল্লাপাড়ার মানুষের অধিকার রক্ষায় জীবন উৎসর্গ করতে চাই।উল্লাপাড়া আসনের জনমতে খান সাঈদ হাসানকে নিয়ে প্রবল উৎসাহ দেখা যাচ্ছে। সম্প্রতি এ বিষয়ে বড়হর খামারপাড়া গ্রামের আব্দুল করিম বলেন, তিনি আমাদের গ্রামের গর্ব। এমপি হলে উপজেলায় ব্যাপক উন্নয়ন হবে এবং সৎ নেতৃত্ব ফিরে আসবে। এই বিষয়ে বাজারের ব্যবসায়ী বলেন, তিনি নির্ভীক মানুষ। জনপ্রশাসনে থেকে ও সততার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। রাজনীতিতে ও সেই সততার প্রতিফলন চায়। এই বিষয়ে স্থানীয় একজন শিক্ষক মনোয়ারা বেগম বলেন, নারী শিক্ষা ও সমাজ উন্নয়নে তিনি যদি কাজ করেন, তবে উল্লাপাড়ার ভবিষ্যৎ বদলে যাবে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেছেন, তাঁর সততা, শিক্ষাগত যোগ্যতা, সরকারি সেবার অভিজ্ঞতা এবং রাজনৈতিক নিপীড়নের ইতিহাস তাঁকে সহানুভূতি ও জনপ্রিয়তা এনে দিয়েছে। বিএনপির আন্দোলনের নেতৃত্বে সক্রিয় থাকায় তরুণ ও শিক্ষিত ভোটাররা তাঁকে নিয়ে আগ্রহী। গ্রাম-গঞ্জ থেকে শহর পর্যন্ত সাধারণ মানুষের মধ্যে তার প্রতি সহানুভূতি রয়েছে। সরকারি চাকরি জীবন থেকে বঞ্চিত হয়ে, রাজনৈতিক নির্যাতন সয়ে আজ ও অবদি তিনি দাঁড়িয়ে আছেন এটিকে স্থানীয়রা এক ধরনের সংগ্রামী প্রতীক হিসেবে দেখেছেন।



























