০৫:৪৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নেপালে ভয়াবহ সহিংসতা রাজধানী কাঠমান্ডুতে সেনা মোতায়েন নিহত ৮

  • প্রকাশের সময় : ০৬:২০:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • 43

 

মোঃ শাহজাহান বাশার,সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার

হিমালয় কন্যা নেপাল ভয়াবহ অস্থিরতায় কেঁপে উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারি নিষেধাজ্ঞা ও দুর্নীতির প্রতিবাদে সোমবার সকালে রাজধানী কাঠমান্ডুতে শুরু হওয়া ছাত্র-যুব প্রজন্মের বিক্ষোভ মুহূর্তেই সহিংস রূপ নেয়। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে অন্তত ৮ জন নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো।

রাজধানী কাঠমান্ডুর বাণেশ্বর এলাকায় সকালে বিক্ষোভ শুরু হলেও দ্রুত তা শহরের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনী মোতায়েন করেছে সরকার। কাঠমান্ডু জেলা প্রশাসন থেকে দুপুর ১২টা ৩০ মিনিট থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়েছে। কিন্তু কারফিউ উপেক্ষা করে বহু মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন।

সংঘর্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জলকামান, টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট ব্যবহার করে বিক্ষোভ দমনের চেষ্টা চালাচ্ছে। অন্যদিকে শিক্ষার্থী ও তরুণরা লাঠি, গাছের ডাল, পানির বোতল ইত্যাদি নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছেন। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মুর্হুমুহু সরকারবিরোধী স্লোগান শোনা যাচ্ছে। এমনকি বিক্ষুব্ধ জনতার একটি অংশ জাতীয় সংসদ ভবনের ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করে।

পরিস্থিতি আরও অবনতির আশঙ্কায় প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন শীতল নিবাস, ভাইস প্রেসিডেন্টের বাসভবন, রাজপ্রাসাদ সিংহ দরবার এবং প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় কঠোর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

গত ২৮ জুলাই নেপাল সরকার ঘোষণা দেয়, দেশটিতে সক্রিয় সব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে সরকারিভাবে নিবন্ধিত হতে হবে। এজন্য ৩ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়। কিন্তু অধিকাংশ প্ল্যাটফর্ম এ নির্দেশ মানেনি। ফলে ৪ আগস্ট থেকে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, এক্সসহ ২৬টি জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়। তবে টিকটক এ তালিকার বাইরে রাখা হয়েছিল।

সরকারের এ পদক্ষেপের পর থেকেই তরুণ প্রজন্ম ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। তারা টিকটক ও বিভিন্ন বিকল্প প্ল্যাটফর্মে প্রতিবাদ শুরু করে এবং আন্দোলনের ডাক দেয়। সরকার যখন বিভিন্ন এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ করে দেয়, তখন ক্ষোভ আরও তীব্র আকার ধারণ করে। শেষ পর্যন্ত সোমবার রাজধানীতে ভয়াবহ বিক্ষোভে তা বিস্ফোরিত হয়।

বর্তমানে পরিস্থিতি অত্যন্ত উত্তেজনাপূর্ণ। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তরুণ সমাজের এই আন্দোলন নেপালের রাজনীতিতে নতুন মোড় এনে দিতে পারে

জনপ্রিয়

উখিয়ায় আমির হোসেনের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক জমি দখল ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে

নেপালে ভয়াবহ সহিংসতা রাজধানী কাঠমান্ডুতে সেনা মোতায়েন নিহত ৮

প্রকাশের সময় : ০৬:২০:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

 

মোঃ শাহজাহান বাশার,সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার

হিমালয় কন্যা নেপাল ভয়াবহ অস্থিরতায় কেঁপে উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারি নিষেধাজ্ঞা ও দুর্নীতির প্রতিবাদে সোমবার সকালে রাজধানী কাঠমান্ডুতে শুরু হওয়া ছাত্র-যুব প্রজন্মের বিক্ষোভ মুহূর্তেই সহিংস রূপ নেয়। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে অন্তত ৮ জন নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো।

রাজধানী কাঠমান্ডুর বাণেশ্বর এলাকায় সকালে বিক্ষোভ শুরু হলেও দ্রুত তা শহরের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনী মোতায়েন করেছে সরকার। কাঠমান্ডু জেলা প্রশাসন থেকে দুপুর ১২টা ৩০ মিনিট থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়েছে। কিন্তু কারফিউ উপেক্ষা করে বহু মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন।

সংঘর্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জলকামান, টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট ব্যবহার করে বিক্ষোভ দমনের চেষ্টা চালাচ্ছে। অন্যদিকে শিক্ষার্থী ও তরুণরা লাঠি, গাছের ডাল, পানির বোতল ইত্যাদি নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছেন। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মুর্হুমুহু সরকারবিরোধী স্লোগান শোনা যাচ্ছে। এমনকি বিক্ষুব্ধ জনতার একটি অংশ জাতীয় সংসদ ভবনের ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করে।

পরিস্থিতি আরও অবনতির আশঙ্কায় প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন শীতল নিবাস, ভাইস প্রেসিডেন্টের বাসভবন, রাজপ্রাসাদ সিংহ দরবার এবং প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় কঠোর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

গত ২৮ জুলাই নেপাল সরকার ঘোষণা দেয়, দেশটিতে সক্রিয় সব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে সরকারিভাবে নিবন্ধিত হতে হবে। এজন্য ৩ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়। কিন্তু অধিকাংশ প্ল্যাটফর্ম এ নির্দেশ মানেনি। ফলে ৪ আগস্ট থেকে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, এক্সসহ ২৬টি জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়। তবে টিকটক এ তালিকার বাইরে রাখা হয়েছিল।

সরকারের এ পদক্ষেপের পর থেকেই তরুণ প্রজন্ম ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। তারা টিকটক ও বিভিন্ন বিকল্প প্ল্যাটফর্মে প্রতিবাদ শুরু করে এবং আন্দোলনের ডাক দেয়। সরকার যখন বিভিন্ন এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ করে দেয়, তখন ক্ষোভ আরও তীব্র আকার ধারণ করে। শেষ পর্যন্ত সোমবার রাজধানীতে ভয়াবহ বিক্ষোভে তা বিস্ফোরিত হয়।

বর্তমানে পরিস্থিতি অত্যন্ত উত্তেজনাপূর্ণ। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তরুণ সমাজের এই আন্দোলন নেপালের রাজনীতিতে নতুন মোড় এনে দিতে পারে