০৩:৩৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

উলিপুরে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

  • প্রকাশের সময় : ০৬:৫৮:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • 38

আতিকুর রহমান আতিক, কুড়িগ্রাম

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি বাস্তবায়নে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে-চাল বিতরণে অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার সুযোগে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পকেট ভারি হচ্ছে, আর প্রকৃত সুবিধাভোগীরা বঞ্চিত হচ্ছেন তাদের প্রাপ্য চাল থেকে।

জেলার অন্যান্য উপজেলায় ডিলারদের মাধ্যমে চাল বিতরণ হলেও উলিপুরে ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। এখানে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও প্যানেল চেয়ারম্যানদের নামে ডিও (ডেলিভারি অর্ডার) ইস্যু করা হয় এবং তারাই বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করেন।

খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে ২৭ হাজার ২০০ জন সুবিধাভোগীর জন্য ৮১৬ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ রয়েছে। প্রতিজনকে ১৫ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি করে চাল বিতরণের কথা।

তবে মাঠপর্যায়ে এর ভিন্ন চিত্র ধরা পড়েছে। বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ ঘুরে দেখা যায়, ৩০ কেজির বস্তা ভেঙে খোলা চাল বিতরণ করা হচ্ছে। এ কারণে অনেক সুবিধাভোগী হাতে পাচ্ছেন ২৮ থেকে ২৯ কেজি করে চাল। এতে সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ হলেও প্রকাশ্যে কথা বলতে সাহস পাচ্ছেন না।

সুবিধাভোগীদের অভিযোগ, বিতরণের নির্ধারিত কমিটিকে সম্পৃক্ত না করেই চাল বিতরণ করা হচ্ছে। ইউপি ভবন ব্যবহার করে এবং গ্রাম পুলিশের সহযোগিতায় এ কার্যক্রম চালানো হয়। ফলে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।

এবিষয় কয়েকটি ইউনিয়ন পরিষদের কয়েক জন চেয়ারম্যানের সাথে এবিষয় কথা হলে  হিসাবের তালিকা ধরায়দেন।
এলএসডি (স্থানীয় খাদ্য গুদাম) কর্মকর্তাকে দিতে হয় ৭ হাজার ৫০০ টাকা, কুলি খরচ টনপ্রতি ১২০ টাকা, গাড়ি ভাড়া ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা,
চাল বিতরণে গ্রাম পুলিশ ও শ্রমিকদের জন্য খরচ হয় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা।
তাদের দাবি, এসব খরচ মেটাতেই হিমসিম খেতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে উলিপুর উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা মেজবাহুল হক বলেন, “ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। তারা যেভাবে পরিচালনা করবে, সেভাবেই বিতরণ হবে।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নয়ন কুমার সাহা বলেন, “চাল বিতরণে কারো এককভাবে লাভবান হওয়ার সুযোগ নেই। বিতরণের যে অতিরিক্ত অর্থ আসে, তা সংশ্লিষ্ট সব সদস্যের মধ্যে ভাগ করতে হয়। অনিয়ম প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।”

স্থানীয়দের অভিযোগ, এই ধরনের অনিয়ম বন্ধ না হলে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির মূল লক্ষ্য-দরিদ্র মানুষের সহায়তা-ব্যাহত হবে।

জনপ্রিয়

উখিয়ায় আমির হোসেনের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক জমি দখল ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে

উলিপুরে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

প্রকাশের সময় : ০৬:৫৮:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আতিকুর রহমান আতিক, কুড়িগ্রাম

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি বাস্তবায়নে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে-চাল বিতরণে অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার সুযোগে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পকেট ভারি হচ্ছে, আর প্রকৃত সুবিধাভোগীরা বঞ্চিত হচ্ছেন তাদের প্রাপ্য চাল থেকে।

জেলার অন্যান্য উপজেলায় ডিলারদের মাধ্যমে চাল বিতরণ হলেও উলিপুরে ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। এখানে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও প্যানেল চেয়ারম্যানদের নামে ডিও (ডেলিভারি অর্ডার) ইস্যু করা হয় এবং তারাই বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করেন।

খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে ২৭ হাজার ২০০ জন সুবিধাভোগীর জন্য ৮১৬ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ রয়েছে। প্রতিজনকে ১৫ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি করে চাল বিতরণের কথা।

তবে মাঠপর্যায়ে এর ভিন্ন চিত্র ধরা পড়েছে। বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ ঘুরে দেখা যায়, ৩০ কেজির বস্তা ভেঙে খোলা চাল বিতরণ করা হচ্ছে। এ কারণে অনেক সুবিধাভোগী হাতে পাচ্ছেন ২৮ থেকে ২৯ কেজি করে চাল। এতে সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ হলেও প্রকাশ্যে কথা বলতে সাহস পাচ্ছেন না।

সুবিধাভোগীদের অভিযোগ, বিতরণের নির্ধারিত কমিটিকে সম্পৃক্ত না করেই চাল বিতরণ করা হচ্ছে। ইউপি ভবন ব্যবহার করে এবং গ্রাম পুলিশের সহযোগিতায় এ কার্যক্রম চালানো হয়। ফলে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।

এবিষয় কয়েকটি ইউনিয়ন পরিষদের কয়েক জন চেয়ারম্যানের সাথে এবিষয় কথা হলে  হিসাবের তালিকা ধরায়দেন।
এলএসডি (স্থানীয় খাদ্য গুদাম) কর্মকর্তাকে দিতে হয় ৭ হাজার ৫০০ টাকা, কুলি খরচ টনপ্রতি ১২০ টাকা, গাড়ি ভাড়া ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা,
চাল বিতরণে গ্রাম পুলিশ ও শ্রমিকদের জন্য খরচ হয় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা।
তাদের দাবি, এসব খরচ মেটাতেই হিমসিম খেতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে উলিপুর উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা মেজবাহুল হক বলেন, “ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। তারা যেভাবে পরিচালনা করবে, সেভাবেই বিতরণ হবে।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নয়ন কুমার সাহা বলেন, “চাল বিতরণে কারো এককভাবে লাভবান হওয়ার সুযোগ নেই। বিতরণের যে অতিরিক্ত অর্থ আসে, তা সংশ্লিষ্ট সব সদস্যের মধ্যে ভাগ করতে হয়। অনিয়ম প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।”

স্থানীয়দের অভিযোগ, এই ধরনের অনিয়ম বন্ধ না হলে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির মূল লক্ষ্য-দরিদ্র মানুষের সহায়তা-ব্যাহত হবে।