০৮:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আগামী নির্বাচনে মাঠে থাকবে ৬০ হাজার সেনাসদস্য দেড় লাখ পুলিশ পাচ্ছে বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব

  • প্রকাশের সময় : ০৬:০৮:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫
  • 62

মোঃ শাহজাহান বাশার, স্টাফ রিপোর্টার

ঢাকা, ২৮ জুলাই ২০২৫ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারাদেশে মোতায়েন করা হবে ৬০ হাজার সেনাসদস্য। পাশাপাশি নির্বাচনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সেপ্টেম্বর থেকে দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে বিশেষ প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হচ্ছে। সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত এক গুরুত্বপূর্ণ পর্যালোচনা সভায় এসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এতে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা, জনপ্রশাসন, আইন, এবং নির্বাচন সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ দফতরগুলোর প্রতিনিধিরা। সভায় আগামী জাতীয় নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রস্তুতি ও ভূমিকা নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়।

রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, “নির্বাচনকে সামনে রেখে সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর—এই তিন মাসে মোট দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হবে নির্বাচনকালীন সহনশীলতা, সংঘাত ব্যবস্থাপনা, তথ্য বিশ্লেষণ, এবং দ্রুত প্রতিক্রিয়া বিষয়ক দক্ষতা।”

তিনি আরও জানান, “নির্বাচনী সহিংসতা প্রতিরোধ, শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ নিশ্চিতকরণ, এবং ভোটারদের নিরাপত্তা বিধানে এই প্রশিক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”

শফিকুল আলম জানান, “নির্বাচনের সময় সারাদেশে ৬০ হাজার সেনাসদস্য মোতায়েন থাকবে। তারা স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মাঠে কাজ করবে এবং প্রয়োজনে ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সহায়তা দেবে।”

সেনাসদস্যদের এই মোতায়েন আগামী নির্বাচনে প্রথমবারের মতো কোনো রাজনৈতিক সরকারের অধীন নয়, বরং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার ইঙ্গিত বহন করছে। এই পদক্ষেপে জনগণের মধ্যে আস্থা ও নিরাপত্তাবোধ আরও দৃঢ় হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সভায় বিভিন্ন বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় বৃদ্ধির বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। নির্বাচনকেন্দ্রিক অপপ্রচার, গুজব ও সাইবার অপরাধ দমনে গঠন করা হবে বিশেষ টাস্কফোর্স। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে গোয়েন্দা নজরদারি, র‌্যাব-পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ কার্যক্রম ও রিহার্সালও নিয়মিত চালানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

সভায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “এই সরকার নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পক্ষে অঙ্গীকারবদ্ধ। নিরাপত্তা ব্যবস্থা শক্তিশালী করে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে কোনোরকম রাজনৈতিক চাপের বাইরে থেকে দায়িত্ব পালনের সুযোগ দিতে হবে।”

এছাড়া সভায় নির্বাচনের আগে সম্ভাব্য সহিংসতা রোধে তথ্য বিশ্লেষণ ও গোয়েন্দা কার্যক্রম বাড়ানোর ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। ভোটারদের নিরাপদ ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটাধিকার প্রয়োগ নিশ্চিত করতে সরকার সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিচ্ছে। সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যদের প্রশিক্ষণ ও মোতায়েনের এই ঘোষণা নির্বাচনকালীন নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা বাড়াবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

জনপ্রিয়

রাষ্ট্র কাঠামো পূর্ণগঠনে বিএনপির ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ ও মতবিনিময় সভা

আগামী নির্বাচনে মাঠে থাকবে ৬০ হাজার সেনাসদস্য দেড় লাখ পুলিশ পাচ্ছে বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব

প্রকাশের সময় : ০৬:০৮:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫

মোঃ শাহজাহান বাশার, স্টাফ রিপোর্টার

ঢাকা, ২৮ জুলাই ২০২৫ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারাদেশে মোতায়েন করা হবে ৬০ হাজার সেনাসদস্য। পাশাপাশি নির্বাচনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সেপ্টেম্বর থেকে দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে বিশেষ প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হচ্ছে। সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত এক গুরুত্বপূর্ণ পর্যালোচনা সভায় এসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এতে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা, জনপ্রশাসন, আইন, এবং নির্বাচন সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ দফতরগুলোর প্রতিনিধিরা। সভায় আগামী জাতীয় নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রস্তুতি ও ভূমিকা নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়।

রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, “নির্বাচনকে সামনে রেখে সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর—এই তিন মাসে মোট দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হবে নির্বাচনকালীন সহনশীলতা, সংঘাত ব্যবস্থাপনা, তথ্য বিশ্লেষণ, এবং দ্রুত প্রতিক্রিয়া বিষয়ক দক্ষতা।”

তিনি আরও জানান, “নির্বাচনী সহিংসতা প্রতিরোধ, শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ নিশ্চিতকরণ, এবং ভোটারদের নিরাপত্তা বিধানে এই প্রশিক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”

শফিকুল আলম জানান, “নির্বাচনের সময় সারাদেশে ৬০ হাজার সেনাসদস্য মোতায়েন থাকবে। তারা স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মাঠে কাজ করবে এবং প্রয়োজনে ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সহায়তা দেবে।”

সেনাসদস্যদের এই মোতায়েন আগামী নির্বাচনে প্রথমবারের মতো কোনো রাজনৈতিক সরকারের অধীন নয়, বরং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার ইঙ্গিত বহন করছে। এই পদক্ষেপে জনগণের মধ্যে আস্থা ও নিরাপত্তাবোধ আরও দৃঢ় হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সভায় বিভিন্ন বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় বৃদ্ধির বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। নির্বাচনকেন্দ্রিক অপপ্রচার, গুজব ও সাইবার অপরাধ দমনে গঠন করা হবে বিশেষ টাস্কফোর্স। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে গোয়েন্দা নজরদারি, র‌্যাব-পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ কার্যক্রম ও রিহার্সালও নিয়মিত চালানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

সভায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “এই সরকার নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পক্ষে অঙ্গীকারবদ্ধ। নিরাপত্তা ব্যবস্থা শক্তিশালী করে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে কোনোরকম রাজনৈতিক চাপের বাইরে থেকে দায়িত্ব পালনের সুযোগ দিতে হবে।”

এছাড়া সভায় নির্বাচনের আগে সম্ভাব্য সহিংসতা রোধে তথ্য বিশ্লেষণ ও গোয়েন্দা কার্যক্রম বাড়ানোর ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। ভোটারদের নিরাপদ ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটাধিকার প্রয়োগ নিশ্চিত করতে সরকার সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিচ্ছে। সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যদের প্রশিক্ষণ ও মোতায়েনের এই ঘোষণা নির্বাচনকালীন নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা বাড়াবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।