১২:১১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আওয়ামী লীগের তিন কোটি ভোটই আজ রাজনীতির অঙ্কে বড় মাথাব্যথা: সাবেক সচিব আবু আলম শহীদ খান

  • প্রকাশের সময় : ০৪:৫২:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • 43

মোঃ শাহজাহান বাশার,সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার

বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার নানা সিদ্ধান্তের পরও দলটির শক্তিশালী ভোটব্যাংক জাতীয় রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। সাবেক সচিব ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক আবু আলম শহীদ খান সম্প্রতি এক টেলিভিশন টকশোতে অংশ নিয়ে এ প্রসঙ্গে খোলামেলা মতামত প্রকাশ করেছেন।

শহীদ খান বলেন, “যারা আওয়ামী লীগকে মাফিয়া পার্টি মনে করেন এবং তাদের নিষিদ্ধ করার পক্ষে, তারাও শেষ পর্যন্ত স্বীকার করেন যে আওয়ামী লীগের ভোট অন্তত ২০ থেকে ২৫ শতাংশ রয়েছে। এখন যদি আমরা ১২ কোটি ভোটার ধরি, তার ২৫ শতাংশ মানে প্রায় তিন কোটি ভোট। আর এই তিন কোটি ভোট মানে তিন কোটি পরিবার। সুতরাং আওয়ামী লীগ একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে বা তাদের খুঁজে পাওয়া যাবে না— এমনটা বলার সুযোগ নেই।”

তিনি উল্লেখ করেন, নির্বাচনে আওয়ামী লীগের স্থায়ী সমর্থন অনেকের কাছে ভয় বা শঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাঁর ভাষায়, “যখনই নির্বাচন হবে, নির্বাচনে তো সকলে সক্রিয় হয়ে উঠবে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন তাদের প্রতীককে ব্যালট থেকে বাদ দিয়েছে। এখন ভবিষ্যতে কি হবে আমরা জানি না। তবে আওয়ামী লীগের এই ভোটব্যাংক কারো কারো মাথাব্যথার কারণ, কারো কাছে জুজুর ভয়, আবার কারো কাছে ভূতের ভয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।”

শহীদ খান রাজনৈতিক বাস্তবতার পাশাপাশি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটও স্মরণ করিয়ে দেন। তিনি বলেন, “ইতিহাসের সাক্ষী না থাকলেও ইতিহাসকে অস্বীকার করা যায় না। আগস্ট-পরবর্তী সময়ে কিংবা তারও আগে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা সংগ্রাম, ভাষা আন্দোলন, ’৫৪ সালের নির্বাচন, ’৬২-এর আন্দোলন, ’৬৬ সালের ছয় দফা, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭০-এর নির্বাচন এবং পাকিস্তানি জান্তার চাপিয়ে দেওয়া মুক্তিযুদ্ধ— এগুলো আমরা নিজের চোখে দেখেছি। এগুলো বাংলাদেশের ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ।”

তরুণ প্রজন্মের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “আমাদের অনেক তরুণ আছেন যারা মুক্তিযুদ্ধ দেখেননি। আমরা নিজেরাও অনেক কিছু দেখিনি— যেমন বিশ্বযুদ্ধ। তবে ইতিহাস থেকে আমরা শিখি। যদি ব্যক্তিগত চিন্তার বাইরে গিয়ে ইতিহাস অধ্যয়ন করা যায়, তাহলে অনেক কিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তাঁর এই বক্তব্য বর্তমান রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এবং তাদের ভোটব্যাংক কীভাবে আগামী নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে— সেটিই এখন সবার কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দু।

জনপ্রিয়

রাজশাহীতে অজ্ঞাত বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার

আওয়ামী লীগের তিন কোটি ভোটই আজ রাজনীতির অঙ্কে বড় মাথাব্যথা: সাবেক সচিব আবু আলম শহীদ খান

প্রকাশের সময় : ০৪:৫২:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

মোঃ শাহজাহান বাশার,সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার

বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার নানা সিদ্ধান্তের পরও দলটির শক্তিশালী ভোটব্যাংক জাতীয় রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। সাবেক সচিব ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক আবু আলম শহীদ খান সম্প্রতি এক টেলিভিশন টকশোতে অংশ নিয়ে এ প্রসঙ্গে খোলামেলা মতামত প্রকাশ করেছেন।

শহীদ খান বলেন, “যারা আওয়ামী লীগকে মাফিয়া পার্টি মনে করেন এবং তাদের নিষিদ্ধ করার পক্ষে, তারাও শেষ পর্যন্ত স্বীকার করেন যে আওয়ামী লীগের ভোট অন্তত ২০ থেকে ২৫ শতাংশ রয়েছে। এখন যদি আমরা ১২ কোটি ভোটার ধরি, তার ২৫ শতাংশ মানে প্রায় তিন কোটি ভোট। আর এই তিন কোটি ভোট মানে তিন কোটি পরিবার। সুতরাং আওয়ামী লীগ একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে বা তাদের খুঁজে পাওয়া যাবে না— এমনটা বলার সুযোগ নেই।”

তিনি উল্লেখ করেন, নির্বাচনে আওয়ামী লীগের স্থায়ী সমর্থন অনেকের কাছে ভয় বা শঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাঁর ভাষায়, “যখনই নির্বাচন হবে, নির্বাচনে তো সকলে সক্রিয় হয়ে উঠবে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন তাদের প্রতীককে ব্যালট থেকে বাদ দিয়েছে। এখন ভবিষ্যতে কি হবে আমরা জানি না। তবে আওয়ামী লীগের এই ভোটব্যাংক কারো কারো মাথাব্যথার কারণ, কারো কাছে জুজুর ভয়, আবার কারো কাছে ভূতের ভয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।”

শহীদ খান রাজনৈতিক বাস্তবতার পাশাপাশি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটও স্মরণ করিয়ে দেন। তিনি বলেন, “ইতিহাসের সাক্ষী না থাকলেও ইতিহাসকে অস্বীকার করা যায় না। আগস্ট-পরবর্তী সময়ে কিংবা তারও আগে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা সংগ্রাম, ভাষা আন্দোলন, ’৫৪ সালের নির্বাচন, ’৬২-এর আন্দোলন, ’৬৬ সালের ছয় দফা, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭০-এর নির্বাচন এবং পাকিস্তানি জান্তার চাপিয়ে দেওয়া মুক্তিযুদ্ধ— এগুলো আমরা নিজের চোখে দেখেছি। এগুলো বাংলাদেশের ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ।”

তরুণ প্রজন্মের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “আমাদের অনেক তরুণ আছেন যারা মুক্তিযুদ্ধ দেখেননি। আমরা নিজেরাও অনেক কিছু দেখিনি— যেমন বিশ্বযুদ্ধ। তবে ইতিহাস থেকে আমরা শিখি। যদি ব্যক্তিগত চিন্তার বাইরে গিয়ে ইতিহাস অধ্যয়ন করা যায়, তাহলে অনেক কিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তাঁর এই বক্তব্য বর্তমান রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এবং তাদের ভোটব্যাংক কীভাবে আগামী নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে— সেটিই এখন সবার কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দু।